করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গত ২২ মার্চ রেল ও স্থলপথে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। হঠাৎ করে বাণিজ্য বন্ধের ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় ৫ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে।
পরবর্তীতে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি সচল হলেও এ পথে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সচলে নানান প্রতিবন্ধকতা আসে।
এ সময় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির বিষয়টি জানালেও সচল হয়নি বাণিজ্য। এক পর্যায়ে রেল কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস, বন্দর ও ব্যবসায়ীদের যৌথ উদ্যোগে বিকল্পভাবে বাণিজ্য সচলে রেলপথে পার্সেল ভ্যানে দুই দেশের মধ্যে আমদানি বাণিজ্য চুক্তি হয়।
আরও পড়ুন : দর্শনা রেল বন্দর ৩ দিন বন্ধ
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দেশের সর্ববৃহৎ বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে রেলপথে আমদানি বাণিজ্যে আগ্রহ বেড়েছে ব্যবসায়ীদের। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যেমন স্বস্তি ফিরেছে, তেমনি সরকারেরও রাজস্ব আয় বেড়েছে।
সোমবার (১৭ আগস্ট) বেনাপোল বন্দর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে স্থলপথের পাশাপাশি রেলপথে কার্গো রেল, সাইড ডোর কার্গো রেল এবং পার্সেল ভ্যানে সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাণিজ্য চলছে। এতে ব্যবসায়ীদের যেমন দুর্ভোগ কমেছে, তেমনি বাণিজ্যে গতি বাড়ায় সরকারেরও রাজস্ব আয় বেড়েছে।
এদিকে রেলপথে বাণিজ্য প্রচার হওয়ায় হাসি ফিরে এসেছে বন্দর শ্রমিকদের মধ্যে। করোনার কারণে কাজ কমে যাওয়ায় শ্রমিকরা বিপাকে পড়েছিল।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, স্থলপথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে অবরোধ, হরতাল, শ্রমিক অসন্তোষসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় পণ্য পরিবহন করতে না পেরে ব্যবসায়ীরা প্রায়ই লোকশানের কবলে পড়তেন।
ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে অনেক ক্ষেত্রে এক মাসেরও অধিক সময় লেগে যেত। রেলপথে সব ধরনের পণ্যের আমদানি করতে পারায় এখন আর সে সমস্যা থাকছে না।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সুজন জানান, করোনার অজুহাত দেখিয়ে ভারতের পেট্রাপোলের এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে মাসের পর মাস ট্রাক আটকে রেখে ফায়দা লুটছিল।
এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে শুরু হয় রেলপথে ত্রিমুখী আমদানি বাণিজ্য। এভাবে চলতে থাকলে আশা করা যাচ্ছে চলতি অর্থ বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব আসবে।