শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন

রাস্তার মোড়ে মোড়ে চামড়া নিয়ে অপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শনিবার, ১ আগস্ট, ২০২০
রাস্তার মোড়ে মোড়ে চামড়া নিয়ে অপেক্ষা
রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

চমড়া বিক্রির আশায় রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বসে অপেক্ষা করছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। ঈদের দিন দুপুর থেকে তাদের সেই অপেক্ষা যেন আর শেষই হচ্ছে না। চামড়া কিনতে আসছেনা কেউই।

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা মহল্লা ঘুরে ঘুরে একদিকে চামড়া সংগ্রহ করছে, অপরদিকে সেগুলো বিক্রির জন্য রাস্তার মোড়ে এনে জড়ো করছে। এভাবেই স্তূপের পরিমাণ বাড়ছে। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব দৃশ্য চোখে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রহস্যজনক কারণে রাজধানীতে এ বছর মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের দেখা মিলছে না। অনেক মহল্লায় ঘুরে সারা দিনেও একজন মৌসুমি চামড়া ক্রেতার দেখা মেলেনি।

কারণ জানতে চাইলে দনিয়ার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম হোসেন জানিয়েছেন, ব্যবসা মন্দার কারণে এ বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা হয়তো ঝুঁকি নেয়নি। আর এ বছর এমনিতেই চামড়ার চাহিদা কম, যা আগে থেকেই জানা গেছে। ফলে তারা রাস্তায় নামেনি।

আরও পড়ুন : এই গরুর দাম ৫০ লাখ টাকা

মহল্লায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা না থাকায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে গেছে চামড়া সংগ্রহের জন্য। কোরবানিদাতারাও সেভাবেই মাদ্রাসায় নিজের কোরবানি করা গরু বা ছাগলের চামড়া দান করে দিয়েছেন।

তাই মাঠপর্যায়ে চামড়ার দাম জানা যায়নি। যদিও সরকার এবার গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট সর্বনিম্ন ২৮ সর্বোচ্চ ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকায় এ বছর লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

একইসঙ্গে সারা দেশে প্রতি বর্গফুট খাসির কাঁচা চামড়া ১৩ থেকে ১৫ টাকা এবং বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্যানারি মালিকরা এই দামেই কাঁচা চামড়া কেনার ঘোষণা দিয়েছেন।

শাহজাহানপুরের মোবারক হোসেন জানিয়েছেন, তিনি নিজের কোরবানি করা পশুর চামড়া দান করেছেন ঝিল মসজিদ নুরানি মাদ্রাসায়। এভাবেই ওবায়দুল্লাহ মিয়া ঝিল মসজিদে চামড়া দান করেছেন।

মাদারটেকের নুরুল ইসলাম, শেওড়াপাড়ার নজরুল ইসলাম ও মিরপুরের জাকির হোসেন হাবীবও তার গরুর চামড়া নিজ নিজ এলাকার মাদ্রাসা ও মসজিদে দান করে দিয়েছেন।

রাজধানীর মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, এ বছর এ ব্যবসায় নামিনি। কারণ গত দুই বছর কোরবানির ঈদে চামড়া কিনে লোকসান দিয়েছি। পুঁজিও উঠানো যায়নি। তাই এবার আগে থেকে দেখেশুনেই এ বছর ব্যবসা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এদিকে, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোনোভাবেই কোরবানির পশুর চামড়া নষ্ট হতে দেবো না। চামড়া আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ জন্যই এবার কাঁচা ও ওয়েট ব্লু চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত দিয়েছি। শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জানিয়েছেন, চামড়া বাংলাদেশের সম্পদ।

সাভারের ট্যানারি পল্লির কারখানাগুলো নতুন চামড়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে কারখানাগুলোয় চামড়া পৌঁছার আগে রাজধানীর পোস্তায় কাঁচা চামড়া বেচাকেনা হবে আগামী এক থেকে দেড় মাস। যা হয়তো কাল বা পরশু থেকেই শুরু হবে। পোস্তার ব্যবসায়ীরাই কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার প্রথম কাজটি শুরু করেন লবণ মাখানোর মধ্য দিয়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া

%d bloggers like this:
%d bloggers like this: