স্পোর্টস ডেস্ক :
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জয়ের জন্য শেষ ২৪ বলে প্রয়োজন ছিল ৩৩ রান। হাসান মাহমুদের করা ১৭তম ওভারে তিন চার আর দুই ছয়ে ২৫ রান তোলে সমীকরণ সহজ করেন আন্দ্রে রাসেল। পরের ওভারে শেখ মেহেদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ১৫ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করেন এই ক্যারিবিয়ান হার্ডহিটার। ৬ উইকেটের জয়ে শীর্ষ দুইয়ে থাকা নিশ্চিত করল কুমিল্লা।
তবে এর আগে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার জয়টা অনেকটা কঠিন করে দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এবারের টুর্নামেন্টে উইকেট নেওয়ার পর নানান রকমের উদ্যাপন করছেন তিনি। নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে তামিম ইকবালের উইকেট নিয়ে অনেকটা পেশির শক্তি দেখাচ্ছিলেন। পরে অবশ্য তামিমও একই উদ্যাপন করেন যখন সাকিব আউট হন। আর আজ তাওহীদ হৃদয়কে আউট করে টা টা উদ্যাপন করেন বাঁহাতি স্পিনার। সঙ্গে দুই হাত ঊর্ধ্বে ছড়িয়ে দিয়ে উদ্যাপন তো করেনই।
উদ্যাপনে নতুনত্ব আনলেও মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মুখে হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি সাকিব। রাসেলের অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে কুমিল্লার কাছে ৬ উইকেটের পরাজয় দেখেছে তাঁর দল রংপুর। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে হারলেও ১৮ পয়েন্টে শীর্ষে থেকে আগেই শেষ চার নিশ্চিত করেছে তারা।
রংপুরের দেয়া ১৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আজ সূচনাটা ভালোই করেছিল কুমিল্লা। লিটন দাস ও সুনীল নারাইনের ওপেনিং জুটিতে ৪ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ওঠে ৩৬ রান। তবে পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই সাকিবের বলে আউট হন নারাইন।
নারাইন ফেরার পর ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। একই ওভারের তৃতীয় বলেই এই টাইগার ব্যাটারকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ফলে পরপর দুই উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে কুমিল্লা।
তবে অধিনায়ন লিটন দাস তৃতীয় উইকেটে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামলে ওঠেন। রংপুরের বোলারদের সামলে এ দুজন রানের চাকা সচল রাখেন।
লিটন-অঙ্কন মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে স্কোরবোর্ডে তুলেন ৬৫ রান। এ জুটিতেই জয়ের ভিত্তি পায় কুমিল্লা। তবে ৪২ বলে ৪৩ রান করে দলীয় ১০১ রানে বিদায় নেন লিটন। পরের ওভারেই অঙ্কনও আউট হন ২৯ বলে ৩৯ রান করে। ফলে ফের হোচট খায় কুমিল্লা।
তবে এরপর মাঠে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালান আন্দ্রে রাসেল। ক্যারিবীয় এই ব্যাটার আজ ১২ বলে সমান ৪টি করে চার ও ছয়ে করেন ৪৩ রান। এমন ঝোড়ো ইনিংস খেলার আগে বোলিংয়েও ৩ উইকেট নেন রাসেল। অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি। ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে রংপুরের সেরা বোলার সাকিব।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রংপুর। দলীয় ৩৯ রানেই প্রথম সারির চার উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি। এরপর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ২৯ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন জেমস নিশাম। কিন্তু দলীয় ৬৮ রানে সাকিবকে ফিরিয়ে এ জুটি বড় হতে দেননি তরুণ পেসার মুশফিক হাসান।
স্কোরবোর্ডে ৩৯ রান যোগ করতে আরও পাঁচটি উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে যায় রংপুর। তবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন নিশাম। দশম উইকেটে ইমরান তাহিরের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন এই অলরাউন্ডার। যা ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটি। তবে এই জুটিতে তাহিরের অবদান মাত্র ৫ রান। আর এই জুটিতেই দেড়শ রানের পুঁজি পায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন নিশাম। ৪২ বলের ইনিংসটি সাজাতে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন এই কিউই অলরাউন্ডার। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। এ দুই ব্যাটার ছাড়া দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল রনি তালুকদার। ১৪ রান করেন তিনি।
অনুশীলনে মোস্তাফিজুর রহমান চোট পাওয়ায় সুযোগ পাওয়া মুশফিক হাসান এদিন দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। চার ওভার বল করে ১৮ রানের খরচায় পেয়েছেন ৩টি উইকেট। ২০ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেলও। ম্যাথিউ ফোর্ড পান ২টি উইকেট।