শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ন

রাজনীতি করলে জেল-জুলুম সহ্য করতে হয় : আদালতে সাবেক মন্ত্রী

রংপুর জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
রাজনীতি করলে জেল-জুলুম সহ্য করতে হয় : আদালতে সাবেক মন্ত্রী

রংপুর জেলা প্রতিনিধি : 

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও লালমনিরহাট-২ আসনের সাবেক এমপি নুরুজ্জামান আহমেদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৩ এর বিচারক দেবী রানী রায়ের আদালতে হাজির করা হয়।

সরকার পক্ষে আসামির জন্য আর রিমান্ডের আবেদন ছিল না। বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আসামিপক্ষের করা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।

এর আগে বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে আসামিকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার তদন্তকারী এসআই মোস্তাফিজ আদালতে জানান, আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সে কারণে নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি।

অপরদিকে আসামিপক্ষে রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইদ কামাল ইবনে খতিব নেতৃত্বে ১৫ আইনজীবী আদালতে জামিনের আবেদন করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী আদালতে বলেন, আসামি ৭৬ বছর বয়স্ক একজন বৃদ্ধ। তিনি বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। তাকে নির্দোষ দাবি করে বলা হয়, তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায়। তিনি ঘটনার সময় রংপুরে ছিলেন না। মুন্না হত্যার সঙ্গে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই। তাছাড়া তিনি ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে উপজেলা চেয়ারম্যান এরপর কয়েকবারের এমপি- এরপর তিনি মন্ত্রী ছিলেন। এলাকায় ভীষণ জনপ্রিয়। তার জামিন মঞ্জুর করার জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানানো হয়।

শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক আসামির কাছে জানতে চান তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় খারাপ আচরণ কিংবা নির্যাতন করা হয়েছে কি না। নুরুজ্জামান বলেন, তার সঙ্গে কোনও খারাপ আচরণ বা নির্যাতন করা হয়নি। এরপর বিচারক আসামির জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসামির পরনে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট থাকলেও মাথায় পরানো হেলমেট খুলে তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাকে হাসিখুশি দেখাচ্ছিল। সে সময় বলছিলেন, রাজনীতি করলে জেল জুলুম সহ্য করতে হয়- সেটা ভাগ্যে থাকলে তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত।

এদিকে শুনানি শেষে আসামি নুরুজ্জামানের প্রধান আইনজীবী রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইদ কামাল ইবনে খতিব সাংবাদিকদের জানান, তিনি জামিনের আবেদন করেছিলেন, কিন্তু বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন।

এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন কি না এমন প্রশ্নে বলেন, আসামিকে তিনি চেনেন না। তার কোনও স্বজনের সঙ্গে তার কথা হয়নি। তবে আসামির একজন আইনজীবী সহকর্মী তাকে এঙ্গেজ করেছেন। আসামির জন্য কারাগারে ডিভিশন সুবিধা দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। বিচারক এ বিষয়ে দেখে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোড এলাকায় অবস্থিত এক ভাগ্নের বাসা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট এস এম মুন্না হত্যা মামলার এজাহারনামীয় এক নম্বর আসামি তিনি। পর দিন শুক্রবার সকালে আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজ। আদালত পাঁচ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া