Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাঙামাটিতে শিশু হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
  • ১৯০ জন দেখেছেন

রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি : 

রাঙামাটিতে এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যার দায়ে অংবাচিং মারমা নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেনের আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেনের আদালত এ রায় প্রদান করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা থানার বড়খোলা পাড়ার ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মিতালী মারমা আসামি অংবাচিং মারমা প্রকাশ বামং’র বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায়। অতিরিক্ত পড়ানোর কথা বলে তার সঙ্গে পড়তে যাওয়া অন্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে মিতালীকে রেখে দেন অংবাচিং মারমা। বাড়িতে অন্য কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে মিতালিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। মিতালী ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করলে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

পরে ভুক্তভোগী বাড়ি না ফেরায় তার বাবা খোঁজে বের হন। তখন আসামি পড়া শেষ করে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিতালীকেও ছুটি দেন বলে জানান। আসামির আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় মিতালীর বাবা স্থানীয়দের নিয়ে লুকিয়ে আসামির বাড়ি পাহারা দিতে থাকেন। পরের দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে আসামি মিতালীর বস্তাবন্দি মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বাড়ির বাইরে আনলে বস্তাসহ স্থানীয়রা তাকে আটক করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড এবং দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মিতালী চাকমার বাবা সাথুই অং মারমা বলেন, আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তার বিচার আমি পেয়েছি। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট। আর কোনো মা-বাবার বুক যাতে এভাবে খালি না হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। গৃহশিক্ষক অংবাচিং মারমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। এই রায়ে আমরা খুশি।’

তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে দুটি রায়ে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কালেক্টরকে আসামির মালিকানাধীন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুত করে ক্রোক এবং নিলামে বিক্রি করে টাকা ট্রাইব্যুনালে জমা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমার এই রায়ের বিপক্ষে থাকার কথা। কিন্তু যেহেতু এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ, তাই আমি মনে করি এই রায়ের ফলে সমাজে একটি শক্ত বার্তা পৌঁছাল। আসামির পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

রাঙামাটিতে শিশু হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি : 

রাঙামাটিতে এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যার দায়ে অংবাচিং মারমা নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন রাঙামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেনের আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে রাঙামাটির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ ই এম ইসমাইল হোসেনের আদালত এ রায় প্রদান করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা থানার বড়খোলা পাড়ার ৯ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মিতালী মারমা আসামি অংবাচিং মারমা প্রকাশ বামং’র বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায়। অতিরিক্ত পড়ানোর কথা বলে তার সঙ্গে পড়তে যাওয়া অন্য শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে মিতালীকে রেখে দেন অংবাচিং মারমা। বাড়িতে অন্য কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে মিতালিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। মিতালী ভয় পেয়ে চিৎকার শুরু করলে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

পরে ভুক্তভোগী বাড়ি না ফেরায় তার বাবা খোঁজে বের হন। তখন আসামি পড়া শেষ করে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিতালীকেও ছুটি দেন বলে জানান। আসামির আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় মিতালীর বাবা স্থানীয়দের নিয়ে লুকিয়ে আসামির বাড়ি পাহারা দিতে থাকেন। পরের দিন ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে আসামি মিতালীর বস্তাবন্দি মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বাড়ির বাইরে আনলে বস্তাসহ স্থানীয়রা তাকে আটক করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ময়নাতদন্তে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড এবং দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মিতালী চাকমার বাবা সাথুই অং মারমা বলেন, আমার মেয়েকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তার বিচার আমি পেয়েছি। আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট। আর কোনো মা-বাবার বুক যাতে এভাবে খালি না হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে অপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। গৃহশিক্ষক অংবাচিং মারমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। এই রায়ে আমরা খুশি।’

তিনি আরও জানান, একই সঙ্গে দুটি রায়ে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার কালেক্টরকে আসামির মালিকানাধীন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির তালিকা প্রস্তুত করে ক্রোক এবং নিলামে বিক্রি করে টাকা ট্রাইব্যুনালে জমা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশীদ বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমার এই রায়ের বিপক্ষে থাকার কথা। কিন্তু যেহেতু এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ, তাই আমি মনে করি এই রায়ের ফলে সমাজে একটি শক্ত বার্তা পৌঁছাল। আসামির পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।