নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও নান্দনিক স্থাপনা এবং দেওয়ালে যে পোস্টার লাগাবে, তার গলায় জুতার মালা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট পরিদর্শন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যত্রতত্র পোস্টার লাগানো বন্ধে প্রজ্ঞাপন চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা শহরকে দৃষ্টিনন্দন করার অনেক কাজই করি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সে কাজগুলো কিছুদিন পরেই পোস্টারের আড়ালে ঢেকে যায়। মহাখালীতে যে দৃষ্টিনন্দন স্ট্রিট আর্ট করা হয়েছে, তার ওপর আমি কোনো পোস্টার দেখতে চাই না। যে পোস্টার লাগাবে, তার গলায় জুতার মালা দেওয়া হবে। এই শহরকে নোংরা করার কোনো অধিকার নেই। যারা পরিবেশ নষ্ট করে, তাদের ধিক্কার জানাতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই ঢাকা শহর পোস্টারে ঢেকে যায়। স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা কেন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন করতে পারছি না? আমি ইসিকে অনুরোধ করতে চাই, নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া পোস্টার লাগানো যাবে না, এমন প্রজ্ঞাপন জারি করুন।
আতিক বলেন, আমরা একটি সুস্থ ও আধুনিক ঢাকা চাই। বিজয়ের মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করে বলতে চাই, তারা গাড়ি-বাড়ি কিংবা অর্থসম্পদের জন্য দেশ স্বাধীন করেননি। তারা কেবল দেশের কথা ভেবেই স্বাধীনতা এনেছেন। এই স্বাধীন বাংলাদেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব আমাদের।
মেয়র বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে নান্দনিক কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সে মোতাবেক কাজ করছি। ইতোমধ্যে কাউলা এক্সপ্রেসওয়ে নিভে প্লে জোন করা হয়েছে। আমরা শহরের প্রতিটি রাস্তাতেই এমন স্ট্রিট আর্ট দেখতে চাই।’
তিনি বলেন, মগবাজার ফ্লাইওভারের মতো মহাখালী ফ্লাইওভারেও বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতির মাধ্যমে সাজানো হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি পিলারের অংশের কাজ শেষ হয়েছে। শহরকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পিলারে আঁকা এসব চিত্রকর্মের মাধ্যমে কিছু ‘শিক্ষণীয়’ বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আছে ‘হর্ন বাজানো নিষেধ’, ‘শহরটাকে ভালোবাসি’, ‘দেশটাকে ভালোবাসি’, ‘গাছ লাগাই পরিবেশ বাঁচাই’ সহ নানা স্লোগান। যাতে মানুষ পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতন হয়। পাশাপাশি ফ্লাইওভারের বিভিন্ন পিলারে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। যাতে কেউ এসব চিত্রকর্ম নষ্ট করতে না পারে।
ডিএনসিসি এলাকার প্রত্যেকটি ফ্লাইওভারেই এই দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতি আর্ট করা হবে জানিয়ে মেয়র আতিক বলেন, প্রথমে মগবাজার ফ্লাইওভারের পিলারে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়েছে। এরপর মহাখালী ফ্লাইওভারের পিলারেও বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতির মাধ্যমে সাজানো হচ্ছে।
এই গ্রাফিতি আর্ট যেখানে সেখানে পোস্টারিং বন্ধে জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শহরের নামি রিকশা পেইন্টাররা গ্রাফিতির কাজ করছেন। এসব গ্রাফিতির রঙ করার কাজে সাহায্য করছে বার্জার পেইন্টস।
মহাখালী ফ্লাইওভারে গ্রাফিতি প্রসঙ্গে ডিএনসিসির মেয়র বলেন, আমরা একটি সুস্থ, সুন্দর, আধুনিক ঢাকা চাই। তাই পরিবেশ সুন্দর রাখতে, যত্রতত্র পোস্টার লাগানো বন্ধ করতে শুধু মগবাজার বা মহাখালী ফ্লাইওভার নয়, শহরের অন্যান্য ফ্লাইওভারেও সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন গ্রাফিতির কাজ করা হবে। সব ফ্লাইওভারে পর্যায়ক্রমে নানা রঙে রঙিন করে সাজানো হবে। এসব কাজ করতে আমাদের পাশে থাকার জন্য বার্জারের রূপালী চৌধুরীকে অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের অপারেটিং অফিসার মহসীন হাবিব, ম্যানেজিং ডিরেক্টর রূপালী চৌধুরী, ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল্লাহ আল মঞ্জুর, স্ট্রিট আর্ট প্রজেক্ট শিল্পী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।