নিজস্ব প্রতিবেদক :
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কারণে কোনো দেশের সরকারের ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর মিরপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বহু দেশের ওপর ভিসা নীতি কার্যকর করেছে। তারা নাইজেরিয়ার ওপর ভিসা নীতি কার্যকর করেছে, তাদের সরকারের কিছু হয়নি। কম্বোডিয়ার ওপর কার্যকর করেছে, সেখানকার সরকারের কিছু হয়নি। উগান্ডার ওপরও তারা ভিসা নীতি কার্যকর করেছে, সরকারের কিছু হয়নি। কিউবার ওপর ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে ভিসা নীতি কার্যকর ছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০ মাইল দূরে কিউবার কিছু হয়নি। সুতরাং এই ভিসা নীতি নিয়ে এত মাতামাতির কোনো কারণ নাই।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো এবং তা উত্তরোত্তর ঘনিষ্ঠ হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন, জো বাইডেন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেলফি তুলেছেন এবং নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জো বাইডেন সস্ত্রীক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিউ ইয়র্কেও ছবি তুলেছেন, ছবিই কথা বলে। তাতেই প্রমাণ করে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কতটা ভালো। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে মাথা ঘামাই না। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। সুতরাং এটা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এটা তাদের নীতি, তারা কাকে ভিসা দেবে আর কাকে দেবে না সেটি তাদের ব্যাপার।
বিএনপি নেতারাই ভিসা নীতির কবলে পড়েছেন দাবি করে তিনি আরও বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন যে, ভিসা নীতিতে তাদের আন্দোলন বেগবান হয়েছে। কিন্তু ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে, যারা নির্বাচনে বাধা দেবে, তাদের ওপর এই নীতি প্রয়োগ হবে। আর যাদের ওপর ইতোমধ্যেই ভিসা নীতি কার্যকর হয়েছে তাদের মধ্যে বিরোধী দলের নেতারাও আছেন।
ড. হাসান মাহমুদ বলেন, খালি কলসি বেশি বাজে, আর রাস্তায় যখন কুকুরের লড়াই হয়, তখন দেখা যায় যেই কুকুর লেজ গুটিয়ে ফেলে সেই কুকুরের আওয়াজও বেশি। বিএনপির হাক ডাক হচ্ছে খালি কলসি বাজার মতো। আমি বিএনপিকে রাস্তায় যে নেড়ি কুকুর লেজ গুঁটিয়ে ফেলে বেশি আওয়াজ করে তার সঙ্গে তুলনা করতে চাচ্ছি না। বিএনপির আওয়াজ খালি কলসি বাজার মতো।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির হাঁক-ডাক হচ্ছে খালি কলসি বেশি বাজার মতো। আজকে অনলাইনে দেখলাম বিএনপি নেতারা বলেছেন যে, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ ঘেরাও করে সরকারের পতন ঘটানো হবে। আমরাও প্রস্তুত আছি, আমরা বিএনপিকে ঘেরাও করব। তাদের এবার শিক্ষা দেব। ফখরুল সাহেব বলছেন, ভিসা নীতির কারণে তাদের আন্দোলন নাকি বেগবান হয়েছে। কিন্তু তারা হয়ত ভুলে গেছেন যে, ভিসা নীতির আওতায় বিরোধী দলের নেতারাও আছেন।
বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর তারা বলেছিল যে, এই সরকার নাকি তিন মাসও টিকবে না। অথচ এই সরকারের আমলেই তাদের নেতা খালেদা জিয়ার দুর্নীতির বিচার হয়েছে। তিনি সাজাও ভোগ করছেন। তাই নির্বাচন ঠেকানোর ষড়যন্ত্র করে সরকারের পতন ঘটানো যাবে না। আওয়ামী লীগ রাজপথের দল এবং লড়াই সংগ্রামের দল। শেখ হাসিনা এ দেশের মানুষের মর্যাদা বাড়িয়েছেন।
বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিকে বলব আপনারা নির্বাচনে আসুন। যদি নির্বাচনে না আসেন তবুও আপনাদের নেতারা নির্বাচনে আসবে। এমনকি নির্বাচনের আগেই আপনাদের অনেক নেতা দল বদল করে ফেলেছে। সুতরাং ষড়যন্ত্র না করে নির্বাচনে আসুন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের রাজপথে থাকতে হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম), শাজাহান খান, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সংসদ সদস্য হাবিব হাসান এবং ইলিয়াস আলী মোল্লা, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খাঁন নিখিল ও সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু।