গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি :
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর ভাসমান অবস্থায় আলিফ (১৭) নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভবানিপুর খেয়াঘাটসংলগ্ন মেঘনা নদীতে আলিফের মরদেহটি ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে। গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আলিফ (১৭) গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুরা গ্রামের মো. ফয়সাল প্রধানের একমাত্র ছেলে। সে এবার ভবেরচর ওয়াজীর আলী হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত আলিফের বন্ধু আরাফাত হোসেন জানায়, রোববার (৫ মে) আমরা ৯ বন্ধু মিলে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে মেঘনা সেতুর নিচে মেঘনা নদীতে গোসল করতে নামি। আমাদের মধ্যে সবাই সাঁতার জানলেও একমাত্র আলিফ সাঁতার জানতো না। আমরা সাতরে কিছুটা দূরে গিয়ে গোসল করছিলাম।
আলিফ নদীর কিনারায় ছিল। সে সাতরে আমাদের কাছে আসতে চাইলে স্রোতের তোড়ে ভেসে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে সবাই মিলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। দীর্ঘক্ষণেও তার কোনো হদিস না পেলে তার পরিবার এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়।
আলিফের চাচা মাসুম প্রধান বলেন, বাসা থেকে বের হওয়ার আগে সে তার মাকে বলে এসেছিল বন্ধুরা গোসল করবে সে নদীর পাড়ে বসে সেটা দেখবে। সে সাঁতার জানে না সেজন্য পানিতে নামবে না। পরে খবর পেয়েছি, সে পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। আলিফ তার বাবার মার একমাত্র ছেলে। তার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়ার খবরে বাবা-মা পাগলপ্রায়। আজ তার মরদেহ উদ্ধার হলো। সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। আর মাত্র ৫ দিন বাকি ফল প্রকাশের। এর মধ্যে চলে গেল আলিফ।
গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রিফাত মল্লিক বলেন, খবর পাওয়া মাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। গত রবিবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকা থেকে একটি ডুবুরি দল আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। আমরা চেষ্টা চালিয়ে চালিয়ে তার সন্ধান পাইনি।
গজারিয়ায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিখোঁজ আলিফের মরদেহ উদ্ধার করেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।