বাংলাদেশের সঙ্গীত জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু। ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯০ সালের এই দিনে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। মৃত্যুর ৩০ বছর পরেও গীতিকার হিসেবে উজ্জ্বল হয়ে আছেন নজরুল ইসলাম বাবু। দেশের গানের কথা বলতে গেলেই তার লেখা ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ ও ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ কালজয়ী এ গান দুটির কথা যে কারো মনে আসে।
১৯৯০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরলোকে পাড়ি জমান নজরুল ইসলাম বাবু। মৃত্যুর পরের বছর ১৯৯১ সালে ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’ ছবিতে গান লিখে শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে আছে- সবকটা জানালা খুলে দাও না, একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার, আমায় গেঁথে দাও না মাগো, দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা, পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই, ডাকে পাখি খোল আঁখি, কাল সারারাত ছিল স্বপ্নের রাত, আমার গরুর গাড়ীতে বউ সাজিয়ে, কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো, কাঠ পুড়লে কয়লা হয়, এই অন্তরে তুমি ছাড়া নেই কারো, আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা, তোমার হয়ে গেছি আমি, মায়ের মাথার সিঁথির মতো লম্বা সাদা পথ, হৃদয়ের চেয়ে ভালো কোনো ফুলদানি নেই।
গানের কথায় চমৎকার শব্দ চয়নের দক্ষতা দেখিয়েছেন নজরুল ইসলাম বাবু। শব্দের ব্যবহার তাকে অন্যদের চেয়ে অনন্য করে তুলেছে। তার সমসাময়িক বেশ কয়েকজন গীতিকবি ও সুরকার এমনটাই দাবি করেন। তার একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল গান রচনার পর সেই গানের কথার কোনো পরিবর্তন করতে চাইতেন না। বলতে গেলে বিষয়টি নিয়ে তিনি ভীষণ রকমের একরোখা ছিলেন।
আরও পড়ুন : শাহরুখ পত্নী গৌরি খান লেখিকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেন
নজরুল ইসলাম বাবু শুধু গান রচনা করেননি। ১৯৭১ সালে ১১ নম্বর সেক্টরে তুরার পাহাড়ে যুদ্ধপ্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। তার অন্যতম দায়িত্ব ছিল বিস্ফোরক দিয়ে ভারি ও মজবুত সেতু ধ্বংস করা। যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন ২২ বছরের তরুণ।
১৯৪৯ সালের ১৭ জুলাই জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চরনগর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে গীতিকার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৪ সালের ২৩ নভেম্বর শাহীন আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তানের নাম নাজিয়া ও নাফিয়া।