শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:১১ অপরাহ্ন

মুহুরী নদীর বাঁধের ২ স্থানে ভাঙন, ৬ গ্রাম প্লাবিত

ফেনী জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩
মুহুরী নদীর বাঁধের ২ স্থানে ভাঙন, ৬ গ্রাম প্লাবিত

ফেনী জেলা প্রতিনিধি : 

ভারী বর্ষণে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের দুই স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে সদর ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম।

সোমবার (৭ আগস্ট) ভোরে সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া গ্রামে এবং সকাল ৯টার দিকে উত্তর দৌলতপুর গ্রামের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। পানি ঢুকে পড়েছে বসতবাড়ি ও ফসলের খেতে।

ভাঙনের কারণে ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, বিজয়পুর, উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর ও পূর্ব ঘনিয়ামোড়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বানের পানিতে আমন ধানের খেত, শাক-সবজির বাগান তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।

স্থানীয় বাসিন্দা এনাম বলেন, রাত ২টা থেকে মসজিদের মাইকে ডেকে গ্রামের লোকজন একত্রিত করে বরইয়া এলাকার বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছি। প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে আপ্রাণ চেষ্টা করেও পানির তীব্র স্রোতের সঙ্গে আমরা পারিনি। ক্ষতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জমিতে কাল রোপা আমন রোপণ শেষ করেছিলাম। আজ সব পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখানে আশপাশের ৩০-৪০টি পুকুর, ফসলি জমি, মসজিদ, বাড়িঘর সব পানিতে। ভোরে নদীর পানি বিপৎসীমার প্রায় ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। উজানের পানির চাপে বাঁধের দুটি স্থান ভেঙে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়।

উত্তর বরইয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, আমার বাড়িতে রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে গেছে। চুলায় পানি ঢুকে গেছে। এখন চিন্তায় আছি কোথায় গিয়ে উঠব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি।

একই এলাকার বাসিন্দা মো. মোস্তফা জানান, এলাকার মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলে জমি, মাছের ঘের তলিয়ে যায়। আমনের বীজতলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ষাটোর্ধ্ব আবুল বশর বলেন, আমি বিগত ৫০ বছর ধরে দেখছি এভাবে লোকালয়ে পানি ঢুকতে। প্রতিবারই এমন বন্যার সম্মুখীন হই। আমাদের দাবি আমরা ত্রাণ কিংবা সহযোগিতা চাই না। আমরা চাই বাঁধের স্থায়ী সমাধান।

ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, ছয়টি গ্রামের মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন অনেক চেষ্টা করেও প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধ রক্ষা করতে পারেনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত বাঁধের বরইয়া ও দৌলতপুরের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি কমার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মুহুর নদীর পানি বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

জানতে চাইলে ফেনীর জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, আমরা সকাল থেকে খোঁজখবর রাখছি। ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাঠে রয়েছে। পানিবন্দি মানুষদের জন্য শুকনো খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যাতে করে কোনো মানুষ কষ্ট না পায়, সেজন্য সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া