১৫ আগস্টের দুঃসহ স্মৃতি স্মরণ করে আক্ষেপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটি হত্যাকাণ্ড হলে সবাই বিচার চাইতে পারে, মামলা করতে পারে। ১৫ আগস্টে যারা স্বজন হারিয়েছিলাম আমরা একটা মামলা করার কিংবা বিচার চাইবার অধিকারটুকুও ছিল না। সেটা দায়মুক্তি অধ্যাদেশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিলো।
তিনি বলেন, এ দেশে নারী হত্যাকারী, শিশু হত্যাকারী, রাষ্ট্রপতি হত্যাকারীদের বিচার না করে খুনের জন্য পুরস্কৃত করার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।
আরও পড়ুন : বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলবদের শনাক্তে কমিশন গঠন প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী
শুক্রবার (১৪ আগস্ট) সকালে আগারগাঁওয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর আয়োজিত মুজিববর্ষ ও জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কোরআন খানি ও দোয়া মাহফিলে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও সুন্দর জীবনযাপন নিশ্চিত করা তার সরকারের লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ন্যায় পরায়ণতা যেন সৃষ্টি হয়, প্রত্যেকের যেন অধিকার সুরক্ষা হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু পরিবার প্রকল্পের সেবা গ্রহণকারী এতিম শিশুরা অংশ নেয়। সেসব শিশুদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতিম বলেই এতিমের কষ্ট তিনি ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারেন। তোমরা একা নও, আমি ও আমার ছোট বোন আছি তোমাদের সঙ্গে- এসব শিশুদের আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
সমাজের অনগ্রসর তৃতীয় লিঙ্গ, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু অধিকার নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তারা যে সমাজেরও অংশ উল্লেখ করেন তিনি বলেন, এসব জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সচেষ্ট তার সরকার।
জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণ করবে বলে শোক ভুলে আছেন বলেও উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বলেন, মানুষ একটা শোক সইতে পারে না। আর আমরা কী সহ্য করে আছি শুধুমাত্র একটা চিন্তা করে যে এ দেশটা আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন।
আমি এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চাই। তাই যতদূর পারি সেটা করে দিয়ে যাবো, যাতে তার আত্মা শান্তি পায়।
গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার কার্যালয়ে কর্মকর্তারা।
মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে থাকা ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবার ও ক্যাপিটেশনপ্রাপ্ত ৩ হাজার ৯২৮টি প্রতিষ্ঠানের লক্ষাধিক শিশুদের মাধ্যমে ১ লক্ষবার কোরআন খানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
এ পর্যন্ত এসব এতিম শিশুরা ৫০ লক্ষ বার কুরআন খতম দিয়েছে।