Dhaka সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাঠ ছাড়ল মোহামেডান, পিছিয়ে থেকেও জয়ী আবাহনী

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:১৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
  • ১৭৬ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

হকি প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এমন কিছুর দেখা যে মিলবে তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগেই। তার ওপর খেলা যখন দুই চিরপ্রতিন্দ্বন্দ্বী আবাহনী-মোহামেডান। জিতলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে ছিল ছয় বছর পর লিগ জয়ের সুযোগ। দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও নাটকীয়ভাবে তৃতীয় কোয়ার্টারে ঘুরে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে খেলা শেষ হওয়ার আগেই মাঠ ছেড়ে দেয় তারা। জয়ী ঘোষণা করা হয় আবাহনী লিমিটেডকে।

ক্লাব সংশ্লিষ্টরা খেলোয়াড়দের গলায় মালা পরিয়ে দিতে লাগলেন। একটু পর জানা গেল, ম্যাচ খেলতে প্রত্যাখ্যান করায় মোহামেডানের প্রতিপক্ষ আবাহনীকে ৫-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করেছেন ওমানি রেফারি!

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের প্রথম দুই কোয়ার্টারে জোড়া গোলের লিড নেয় আবাহনী। তৃতীয় কোয়ার্টারে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় সাদা-কালোরা। দুই গোল পরিশোধ করে লিডও নেয় দলটি। এরপরই জোড়া লাল কার্ড ইস্যুতে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় মোহামেডান। এই ম্যাচে জয়ী ঘোষণা করা হয় আবাহনীকে। তাতে কপাল খোলে মেরিনার্সের। আর এগিয়ে থেকেও চ্যাম্পিয়নশিপ হাতছাড়া করে ২০১৮ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান।

শেষ পর্যন্ত হারলেও ম্যাচ বয়কটের আগে ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল মোহামেডান। এদিন খেলার তৃতীয় মিনিটেই লিড নেয় আবাহনী। পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করেন ভারতের আফফান ইউসুফ। ২৫তম মিনিটে ২-০ ব্যবধানে লিড নেয় আবাহনী। এবার আবাহনীর হয়ে গোল করেন পুস্কর খীসা। পিছিয়ে পড়া মোহামেডান ম্যাচে ফেরে তৃতীয় কোয়ার্টারে। এই কোয়ার্টারেই একে একে তিনবার আবাহনীর জাল কাঁপায় মোহামেডান। তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই ফয়সাল বিন সারির চমৎকার গোলে ব্যবধান ২-১-এ নামিয়ে আনে সাদা-কালোরা। লং পাস পেয়ে বাম প্রান্ত দিয়ে কয়েকজনকে কাটিয়ে একাই বক্সে ঢুকে পড়েন সারি। এরপর বাঁ হাতের দৃষ্টিনন্দন শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। আবাহনী গোলরক্ষকের পায়ে লাগলেও বল আটকানো যায়নি।

৩৬ মিনিটে ফয়সালের পিসি গোলে ২-২ সমতায় ফেরে মোহামেডান। দুই মিনিট পর ফের পেনাল্টি কর্নার পায় মোহামেডোন। এবারও পিসি থেকে গোল আদায় করে সাদা-কালোরা। ৩-২ ব্যবধানের লিড নেয় মোহামেডান। তৃতীয় গোলেও দলের ত্রাতা ফয়সাল বিন সারি। তার হ্যাটট্রিকের পরই ম্যাচ মোড় নেয় অন্য দিকে।

খেলার ৪২ মিনিটে আবাহনীর পেনাল্টি কর্নার জটলার সৃষ্টি করে মোহামেডানের বক্সে। আবাহনীর আফফানের সঙ্গে মোহামেডানের জুল পিয়াদুস বিন মিজানের সঙ্গে হাতাহাতি লেগে যায়। সেই হাতাহাতিতে এরপর জড়িয়ে পড়েন দুই দলের আরও কয়েক খেলোয়াড়। এ নিয়ে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো। শেষ পর্যন্ত দুই দলের খেলোয়াড়দের ডেকে আম্পায়ার মিলিয়ে দিলেও বাজে পরিস্থিতি এড়ানো যায়নি। আবাহনীর নাইম ও মোহামেডানের দ্বীন ইসলাম ও সিয়ামকে লাল কার্ড দেখান আম্পায়ার। এ ছাড়া হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর আফফান ও মোহামেডানের জুল। তবে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি মোহামেডান । সেটি নিয়ে বেশ কিছু সময় আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক হয় মোহামেডানের। এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত খেলতে অস্বীকৃতি জানায় মোহামেডান। পরে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করেন ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়াররা। এই সময়ের মধ্যে মোহামেডান আর খেলতে রাজি হয়নি।

এর আগে সুপার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে থাকে মেরিনার্স। শুক্রবার মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় পুলিশ এসসিকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। জয়ী দলের মাঈনুল ইসলাম কৌশিক, সোহানুর রহমান সবুজ এবং ভারতের দীপক ও রাজিন্দর সিং একটি করে গোল করেন। পুলিশের দুই ভারতীয় গুরজিৎ সিং ও দীপক প্যাটেল একটি করে গোল করেও দলের পরাজয় ঠেকাতে পারেননি।

এদিন খেলার প্রথম মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে মেরিনার্স। পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে দলকে শুরুতে এগিয়ে নেন পুলিশের ডিফেন্ডার গুরজিৎ। নবম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান মেরিনার্সের দীপক। ১৯ মিনিটে রাজিন্দর পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে মেরিনার্সকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে নেন। ২২ মিনিটে কৌশিকের গোলে আরও এগিয়ে যায় মেরিনার্স। ২৭ মিনিটে দারুণ এক ফিল্ড গোলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন পুলিশের দীপক প্যাটেল (৩-২)। ৩২ মিনিটে আবারও গোল উৎসব মেরিনার্সের। পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে গোল করেন সোহানুর রহমান সবুজ। তাতে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-২। খেলার বাকি সময়ে আর কোনো দল গোল করতে পারেনি। এদিকে সবুজেরও প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়া হয়নি। মোট ৩৯ গোলেই থেমেছেন তিনি।

আম্পায়ার আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করলেও উল্লাসটা বেশি দেখা গেছে মোহামেডানের দিক থেকেই। ক্লাব সমর্থকেরা ফুল পরিয়ে দেন খেলোয়াড়দের। হারার পরও কেনো এমন উল্লাস সেই প্রশ্নের উত্তরে মোহামেডান কোচ শহীদুল্লাহ টিটুর জবাব, আমরা নিজেদের চ্যাম্পিয়ন ভাবছি না। আমরা আবাহনীর চেয়ে গোলে এগিয়ে ছিলাম, সেটারই উৎসব করেছি। মাঠে নামতে কেন অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তার জবাবে টিটু বললেন, ‘আমরা খেলতে অস্বীকৃতি জানাইনি। আমরা একটা লাল কার্ড প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করেছিলাম। আবাহনীর পুস্কর খীসা মিমো, আবদুল্লাহ মারামারি করলেও তাদের কার্ড দেওয়া হয়নি।

পরিকল্পিতভাবে তাদের হারানো হয়েছে দাবি করে ফেডারেশনের বিষোদ্গার করেছেন মোহামেডান ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স। বলেছেন, ‘আমাদের ভিডিও রেফারেল ছিল, আমরা সেটাই চেয়েছি। কিন্তু আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা বারবার বলেছি এই ওমানের আম্পায়ারকে না রাখতে। এই আম্পায়ারই ঊষার বিপক্ষে জিমিকে কার্ড দেখিয়েছিল। পরিষ্কারই বোঝা যায় এখানে ফেডারেশনের হাত আছে।’

আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করায় এখন তাদের সমান ৩৭ পয়েন্ট আছে মেরিনার্সেরও। মোহামেডানের পয়েন্ট ৩৫। আবাহনী-মেরিনার্সের পয়েন্ট সমান হওয়ায় বাইলজ অনুযায়ী প্লে-অফ খেলার কথা দুই দলের। দুই দল খেলতে চাইলে প্লে-অফ বলে জানান হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক সাঈদ। বলেছেন, ‘আমরা দুই দলকে চিঠি দেব। তারা খেলতে চাইলে সময় সুযোগ বুঝে খেলার সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। না চাইলে আলোচনা করে করণীয় ঠিক করা হবে। খেলতে না চেয়ে মোহামেডান আইন ভেঙেছে কিনা সেটা বাইলজ দেখে ঠিক করা হবে।’

আবাহনীর প্লেঅফ খেলতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির ম্যানেজার মাহবুব হারুন। বলেছেন, ‘আবাহনীর প্লে-অফ খেলতে আপত্তি নেই। আমরা অবশ্যই খেলব। ফেডারেশন যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে।’ আগামী রোববার বিকেল ৪টায় দুই দলকে প্লে-অফ খেলার জন্য চিঠি দেবে ফেডারেশন। আবাহনী চাইলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি মেরিনার্স। তবে দলটির প্লে-অফ খেলতে আপত্তি আছে বলে জানা গেছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মাঠ ছাড়ল মোহামেডান, পিছিয়ে থেকেও জয়ী আবাহনী

প্রকাশের সময় : ১১:১৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক : 

হকি প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এমন কিছুর দেখা যে মিলবে তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল আগেই। তার ওপর খেলা যখন দুই চিরপ্রতিন্দ্বন্দ্বী আবাহনী-মোহামেডান। জিতলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সামনে ছিল ছয় বছর পর লিগ জয়ের সুযোগ। দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও নাটকীয়ভাবে তৃতীয় কোয়ার্টারে ঘুরে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে খেলা শেষ হওয়ার আগেই মাঠ ছেড়ে দেয় তারা। জয়ী ঘোষণা করা হয় আবাহনী লিমিটেডকে।

ক্লাব সংশ্লিষ্টরা খেলোয়াড়দের গলায় মালা পরিয়ে দিতে লাগলেন। একটু পর জানা গেল, ম্যাচ খেলতে প্রত্যাখ্যান করায় মোহামেডানের প্রতিপক্ষ আবাহনীকে ৫-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করেছেন ওমানি রেফারি!

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের প্রথম দুই কোয়ার্টারে জোড়া গোলের লিড নেয় আবাহনী। তৃতীয় কোয়ার্টারে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় সাদা-কালোরা। দুই গোল পরিশোধ করে লিডও নেয় দলটি। এরপরই জোড়া লাল কার্ড ইস্যুতে ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় মোহামেডান। এই ম্যাচে জয়ী ঘোষণা করা হয় আবাহনীকে। তাতে কপাল খোলে মেরিনার্সের। আর এগিয়ে থেকেও চ্যাম্পিয়নশিপ হাতছাড়া করে ২০১৮ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান।

শেষ পর্যন্ত হারলেও ম্যাচ বয়কটের আগে ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল মোহামেডান। এদিন খেলার তৃতীয় মিনিটেই লিড নেয় আবাহনী। পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করেন ভারতের আফফান ইউসুফ। ২৫তম মিনিটে ২-০ ব্যবধানে লিড নেয় আবাহনী। এবার আবাহনীর হয়ে গোল করেন পুস্কর খীসা। পিছিয়ে পড়া মোহামেডান ম্যাচে ফেরে তৃতীয় কোয়ার্টারে। এই কোয়ার্টারেই একে একে তিনবার আবাহনীর জাল কাঁপায় মোহামেডান। তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই ফয়সাল বিন সারির চমৎকার গোলে ব্যবধান ২-১-এ নামিয়ে আনে সাদা-কালোরা। লং পাস পেয়ে বাম প্রান্ত দিয়ে কয়েকজনকে কাটিয়ে একাই বক্সে ঢুকে পড়েন সারি। এরপর বাঁ হাতের দৃষ্টিনন্দন শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। আবাহনী গোলরক্ষকের পায়ে লাগলেও বল আটকানো যায়নি।

৩৬ মিনিটে ফয়সালের পিসি গোলে ২-২ সমতায় ফেরে মোহামেডান। দুই মিনিট পর ফের পেনাল্টি কর্নার পায় মোহামেডোন। এবারও পিসি থেকে গোল আদায় করে সাদা-কালোরা। ৩-২ ব্যবধানের লিড নেয় মোহামেডান। তৃতীয় গোলেও দলের ত্রাতা ফয়সাল বিন সারি। তার হ্যাটট্রিকের পরই ম্যাচ মোড় নেয় অন্য দিকে।

খেলার ৪২ মিনিটে আবাহনীর পেনাল্টি কর্নার জটলার সৃষ্টি করে মোহামেডানের বক্সে। আবাহনীর আফফানের সঙ্গে মোহামেডানের জুল পিয়াদুস বিন মিজানের সঙ্গে হাতাহাতি লেগে যায়। সেই হাতাহাতিতে এরপর জড়িয়ে পড়েন দুই দলের আরও কয়েক খেলোয়াড়। এ নিয়ে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো। শেষ পর্যন্ত দুই দলের খেলোয়াড়দের ডেকে আম্পায়ার মিলিয়ে দিলেও বাজে পরিস্থিতি এড়ানো যায়নি। আবাহনীর নাইম ও মোহামেডানের দ্বীন ইসলাম ও সিয়ামকে লাল কার্ড দেখান আম্পায়ার। এ ছাড়া হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর আফফান ও মোহামেডানের জুল। তবে এই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি মোহামেডান । সেটি নিয়ে বেশ কিছু সময় আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক হয় মোহামেডানের। এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত খেলতে অস্বীকৃতি জানায় মোহামেডান। পরে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করেন ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়াররা। এই সময়ের মধ্যে মোহামেডান আর খেলতে রাজি হয়নি।

এর আগে সুপার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে থাকে মেরিনার্স। শুক্রবার মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম খেলায় পুলিশ এসসিকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। জয়ী দলের মাঈনুল ইসলাম কৌশিক, সোহানুর রহমান সবুজ এবং ভারতের দীপক ও রাজিন্দর সিং একটি করে গোল করেন। পুলিশের দুই ভারতীয় গুরজিৎ সিং ও দীপক প্যাটেল একটি করে গোল করেও দলের পরাজয় ঠেকাতে পারেননি।

এদিন খেলার প্রথম মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে মেরিনার্স। পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে দলকে শুরুতে এগিয়ে নেন পুলিশের ডিফেন্ডার গুরজিৎ। নবম মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান মেরিনার্সের দীপক। ১৯ মিনিটে রাজিন্দর পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করে মেরিনার্সকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে নেন। ২২ মিনিটে কৌশিকের গোলে আরও এগিয়ে যায় মেরিনার্স। ২৭ মিনিটে দারুণ এক ফিল্ড গোলে ব্যবধান কমিয়ে আনেন পুলিশের দীপক প্যাটেল (৩-২)। ৩২ মিনিটে আবারও গোল উৎসব মেরিনার্সের। পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে গোল করেন সোহানুর রহমান সবুজ। তাতে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-২। খেলার বাকি সময়ে আর কোনো দল গোল করতে পারেনি। এদিকে সবুজেরও প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়া হয়নি। মোট ৩৯ গোলেই থেমেছেন তিনি।

আম্পায়ার আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করলেও উল্লাসটা বেশি দেখা গেছে মোহামেডানের দিক থেকেই। ক্লাব সমর্থকেরা ফুল পরিয়ে দেন খেলোয়াড়দের। হারার পরও কেনো এমন উল্লাস সেই প্রশ্নের উত্তরে মোহামেডান কোচ শহীদুল্লাহ টিটুর জবাব, আমরা নিজেদের চ্যাম্পিয়ন ভাবছি না। আমরা আবাহনীর চেয়ে গোলে এগিয়ে ছিলাম, সেটারই উৎসব করেছি। মাঠে নামতে কেন অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তার জবাবে টিটু বললেন, ‘আমরা খেলতে অস্বীকৃতি জানাইনি। আমরা একটা লাল কার্ড প্রত্যাহার করতে অনুরোধ করেছিলাম। আবাহনীর পুস্কর খীসা মিমো, আবদুল্লাহ মারামারি করলেও তাদের কার্ড দেওয়া হয়নি।

পরিকল্পিতভাবে তাদের হারানো হয়েছে দাবি করে ফেডারেশনের বিষোদ্গার করেছেন মোহামেডান ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স। বলেছেন, ‘আমাদের ভিডিও রেফারেল ছিল, আমরা সেটাই চেয়েছি। কিন্তু আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা বারবার বলেছি এই ওমানের আম্পায়ারকে না রাখতে। এই আম্পায়ারই ঊষার বিপক্ষে জিমিকে কার্ড দেখিয়েছিল। পরিষ্কারই বোঝা যায় এখানে ফেডারেশনের হাত আছে।’

আবাহনীকে জয়ী ঘোষণা করায় এখন তাদের সমান ৩৭ পয়েন্ট আছে মেরিনার্সেরও। মোহামেডানের পয়েন্ট ৩৫। আবাহনী-মেরিনার্সের পয়েন্ট সমান হওয়ায় বাইলজ অনুযায়ী প্লে-অফ খেলার কথা দুই দলের। দুই দল খেলতে চাইলে প্লে-অফ বলে জানান হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক সাঈদ। বলেছেন, ‘আমরা দুই দলকে চিঠি দেব। তারা খেলতে চাইলে সময় সুযোগ বুঝে খেলার সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। না চাইলে আলোচনা করে করণীয় ঠিক করা হবে। খেলতে না চেয়ে মোহামেডান আইন ভেঙেছে কিনা সেটা বাইলজ দেখে ঠিক করা হবে।’

আবাহনীর প্লেঅফ খেলতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির ম্যানেজার মাহবুব হারুন। বলেছেন, ‘আবাহনীর প্লে-অফ খেলতে আপত্তি নেই। আমরা অবশ্যই খেলব। ফেডারেশন যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে।’ আগামী রোববার বিকেল ৪টায় দুই দলকে প্লে-অফ খেলার জন্য চিঠি দেবে ফেডারেশন। আবাহনী চাইলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি মেরিনার্স। তবে দলটির প্লে-অফ খেলতে আপত্তি আছে বলে জানা গেছে।