নিজস্ব প্রতিবেদক :
থার্ড টার্মিনাল চালু হওয়ার মাধ্যমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের অন্যতম সুন্দর বিমানবন্দরে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) শাহজালালের নবনির্মিত থার্ড টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
বিমানমন্ত্রী বলেন, থার্ড টার্মিনালকে বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দর টার্মিনাল।
এ ধরনের আধুনিক বিমানবন্দর টার্মিনাল বিশ্বের অনেক উন্নত দেশগুলোতেও নেই। তবে অত্যাধুনিক এই বিমানবন্দর টার্মিনালের রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌন্দর্যকে ধরে রাখার বিষয়টিকে বিশাল চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচনা করে জাপানি প্রতিষ্ঠান এর রক্ষণাবেক্ষণ করবে।
তিনি বলেন, থার্ড টার্মিনালকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বিমানবন্দরগুলোর থেকেও দৃষ্টিনন্দন করে তৈরি করা হচ্ছে। থার্ড টার্মিনালের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এখন মাত্র তিন শতাংশ কাজ বাকি আছে। আশা করা যাচ্ছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে। চলতি বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতেই পরিপূর্ণভাবে চালু হবে এই থার্ড টার্মিনাল।
মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত পরিদর্শনে যা দেখলাম সবমিলিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত টার্মিনাল ভবনের ৩% এর মতো কাজ বাকি আছে। তবে এই ৩% মধ্যে কো-অর্ডিনেশন টেস্টিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়ে গেছে। আমি আশা করছি কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই কাজগুলো শেষ করবে।
তিনি বলেন, টার্মিনাল ভবনটির কাজ খুব সুন্দর হয়েছে। তবে শুধু সুন্দর থাকলেই হবে না, তবে এটি সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, মেনটেইনেন্স ভালোভাবে করতে হবে। বাংলাদেশের আবহাওয়া বিবেচনা করলে এখানে ধুলাবালি রয়েছে, মাকড়সা-পাখি বাসা বাঁধার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা যেন এখানে বাসা বাধতে না পারে নিয়মিত মেনটেইনেন্স করতে হবে। জাপানি প্রতিষ্ঠানকে আমি এসব কথা বলেছি।
ভবনটা অনেক দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। তবে এর সফলতা নির্ভর করে এর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের উপর। আমি খুবই আশাবাদী সিভিল এভিয়েশন এই টার্মিনালকে ভালোভাবে পরিচালনার জন্য কর্মীদের প্রস্তুত করছে, যোগ করেন মন্ত্রী।
এই বিমানবন্দর কবে নাগাদ চালু হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে কোথাও এভাবে সুনির্দিষ্ট করে তারিখ বলতে পারে না। কারণ এটা হাইলি টেকনিক্যাল একটা কাজ। এটা কোনোভাবেই পরিকল্পনা করে একদম টাইম মতো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।
বিমানবন্দরের সুষ্ঠু লাগেজ হ্যান্ডেলিংয়ের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লাগেজ হ্যান্ডলিং পৃথিবীর যেকোনো দেশে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যাত্রীরা মনে করে প্লেন থেকে নেমে যেতে যেতে লাগেজ আমার হাতে আসবে, এটা কখনো সম্ভব হয় না। আমরা উন্নতি করার চেষ্টা করছি। প্রথম লাগেজ পেতে এখন ১৫ মিনিট লাগে, পরেরটি পেতে প্রায় ৪০ মিনিট লাগে। এর উন্নতির জন্য আমরা ইক্যুইপমেন্ট কিনেছি। লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য আমরা জাপানের সঙ্গে জয়েন্ট ভেঞ্চারে কাজ করার আলোচনা করছি। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তারা জানায়নি তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে কি না।
নতুন টার্মিনালের সুযোগ সুবিধা নিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য বিমানবন্দর থেকে এখানে চেক-ইন কাউন্টার, ইমিগ্রেশন কাউন্টার অনেক বড় করা হয়েছে। আমি কিছুদিন আগে জার্মানিতে গিয়েছিলাম। সেখানকার একটি বিমানবন্দরে দেখলাম মাত্র ছয়টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। আমার ইমিগ্রেশন করতে তিন ঘণ্টা সময় লেগে গিয়েছিল। আমাদের এখানে ৫৪টা ইমিগ্রেশন করা হয়েছে। আশা করছি সব বয়সী ও শ্রেণী পেশার লোকজন ভালো সার্ভিস পাবেন।
বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমান রানওয়ে ও দ্বিতীয় রানওয়ে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। যেহেতু আশেপাশে অনেক বিল্ডিং হয়ে গেছে, আমরা দেখছি, কীভাবে দ্বিতীয় রানওয়ে চালু করা যায়।
এর আগে মন্ত্রী নতুন এই টার্মিনালের ভবন ঘুরে দেখেন। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বেবিচক চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ বেবিচকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।