দেশের ১৭ নদীর ২৮ পয়েন্টে পানি এখন বিপদসীমার ওপরে। ২০ জেলা এখন বন্যা আক্রান্ত। এসব জেলার প্রায় সোয়া ৬ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি।
আজ পর্যন্ত পানিতে ডুবে মারা গেছে ২২ জন। প্রথম পর্যায়ের বন্যায় প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
গত কয়েক দিনের মতো আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির ফলে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, উত্তরাঞ্চলের ধরলা ও তিস্তা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা ও পার্বত্য এলাকার অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।
এতে নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতিসহ নতুন বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া ও বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টে পানি সোমবারের (২০ জুলাই) তুলনায় কিছুটা নেমে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একইভাবে সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ব্রহ্মপুত্র নদীর নুনখাওয়া পয়েন্টে পানি কিছুটা নেমে ৩৬ থেকে ২৬, চিলমারী পয়েন্টেও কমে ৫১ থেকে ৪২, তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি ২০ , ঘাঘট নদীর গাইবান্ধা পয়েন্টে ৫৩ থেকে নেমে ৪৩, যমুনা নদীর ফুলছড়ি পয়েন্টে ৮২ থেকে কমে ৭২, সারিয়াকান্দি পয়েন্টে ৯৭ থেকে ৮৮, কাজিপুর পয়েন্টে ৮৪ থেকে কমে ৭৪, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৭৭ থেকে কমে ৬৯, আরিচা পয়েন্টে ৬৫ থেকে বেড়ে ৬৮, আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টে একই ১০০, গূড় নদীর সিংড়া পয়েন্টে ৫৭ থেকে বেড়ে ৬৭, ধলেশ্বরী নদীর জাগির পয়েন্টে ১০ থেকে বেড়ে ৪৮, এলাসিন পয়েন্টে ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীর জামালপুর পয়েন্টে ২ থেকে বেড়ে ৪, লাক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জ পয়েন্টে ৪ থেকে বেড়ে ৭, কালিগঙ্গা নদীর তারাঘাট পয়েন্টে ৭৬ থেকে বেড়ে ৮৭, পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১০৭ থেকে কমে ১০৫, ভাগ্যকুল পয়েন্ট একই ৭২, মাওয়া পয়েন্টে ১ বেড়ে ৬৫ থেকে ৬৬ এবং সুরেশ্বর পয়েন্টে ১৪ থেকে বেড়ে ১৯ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৭৫, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৩ থেকে বেড়ে ২৫, পুরাতন সুরমা নদীর দিরাই পয়েন্টে ৮ থেকে বেড়ে ১৪ , যদুকাটা নদীর লরেরগড় পয়েন্টে ১ এবং মেঘনা নদীর চাঁদপুর পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১১ থেকে বেড়ে ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া জানান, সুরমা ছাড়া সব নদীর পানি এখনও স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীগুলোর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল অবস্থায় থাকতে পারে।
তবে ভারী বৃষ্টির কারণে আগামী ৭২ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।