নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারত থেকে যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তিনি ভারতে অনুপ্রবেশ মামলায় দেশটিতে আইনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় মেঘালয়ের শিলং জজ কোর্ট থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপির এই নেতা।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইংয়ের মহাপরিচালক রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার আবেদন মঞ্জুর করেছে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গৌহাটিতে আমাদের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
কবে সালাউদ্দিন দেশে ফিরতে পারেন জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম বলেন, এটা তার ওপর নির্ভর করবে। তিনি যেকোনো সময় আসতে পারবেন।
দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করছেন গুম থেকে ফিরে আসা বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ। ভারতের আদালত থেকে খালাস পেয়ে দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে ট্রাভেল পাসের আবেদন করেছিলেন তিনি। গত ৮ মে ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারের কাছে আবেদন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। দীর্ঘ এক মাস পর তার এই আবেদনে সম্মতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ১ মার্চ ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জজ আদালতের আপিল বিভাগ সালাহউদ্দিন আহমেদকে বেকসুর খালান দেন।
২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর শিলংয়ের নিম্ন আদালতে তিনি খালাস পেয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে। ১ মার্চ স্থানীয় আদালত ওই আপিল আবেদন খারিজ করে দেন। আদালতের রায়ে তাকে বেকসুর খালাস দিয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেন আদালত।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমদ। নিখোঁজের ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধারের পর সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। এর পরদিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২০১৫ সালের ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ সালাহউদ্দিনকে উদ্ধার করে বলে জানা যায়। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাকে গ্রেফতার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন পর গত সোমবার ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালাহউদ্দিন দাবি করেন, ২০১৫ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই মাস আটকে রাখার পর তাকে ভারতে রেখে আসা হয়েছিল। এর আগে তাকে এক বন্ধুর বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে দেশটিতে যে মামলা হয়েছিল সেই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। এখন দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন।