লেবাননের বৈরুতে অবস্থানরত মেহেদি বাবা ও মার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় বিস্ফোরণে মারা যান। এ কথা জানিয়েছেন মেহেদির বন্ধু সুজন। তিনি বেঁচে আছেন।
সুজন ও মেহেদি বৈরুতের বাইরে আশরাফিয়া অঞ্চলে অনেক দিন ধরে বাস করলেও গত তিনমাস ধরে একই রুমে থাকতেন। পাঁচ বছর আগে লেবাননে যাওয়া সুজন বলেন, মেহেদি আমার এক বছর আগে এখানে এসেছে। আমি অনেকদিন ধরে তাকে চিনলেও সখ্যতা গভীর হয় গত তিন মাস ধরে।
জুস তৈরির কোম্পানিতে কাজ করা সুজন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, বিকালে যখন আমি কাজে যাচ্ছিলাম তখন প্রথম বিস্ফোরণ হয়। এর কয়েক সেকেন্ড পরে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ হয়।
বিস্ফোরণের পর সব বিল্ডিংয়ে কাঁচ ও অ্যালুমিনিয়ামের স্ট্রাকচারগুলো রাস্তায় ভেঙে পড়তে থাকে। আমি দ্রুত একটি বিল্ডিংয়ের সানসেটের নিচে শেল্টার নেই।
ধ্বংসযজ্ঞ থামলে আতঙ্কে হতভম্ব হয়ে যাওয়া সুজন রওয়ান হন মেহেদি যে সুপার শপে কাজ করতো সেদিকে। সুজন বলেন, মেহেদির সঙ্গে তার চাচাত ভাইও কাজ করতো।
সেখানে পৌঁছানোর পরে জানতে পারি বিস্ফোরণের পর সবাই সুপার শপ থেকে বের হয়ে আসতে পারলেও মেহেদি বের হয়ে আসতে পারেনি। ভবনের গ্লাস ও স্ট্রাকচার তার ওপর এসে পড়ে।
তিনি বলেন, স্পটেই অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছিল মেহেদির। অনেকে ধারণা করছিল সে মারা গেছে কিন্তু আমরা সবাই চেষ্টা করছিলাম। কিছুক্ষণের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স চলে আসে এবং মেহেদিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন : লেবাননের বৈরুত বিস্ফোরণে ৪ বাংলাদেশি নিহত আহত ৭৮
পরে হাসপাতালে যাওয়ার পরে জানতে পারি আমার রুমমেট মারা গেছে। বর্তমান অবস্থা কি জানতে চাইলে, সুজন বলেন, যদি পারতাম তবে উড়াল দিয়ে দেশে চলে যেতাম।
বাংলাদেশিরা আতঙ্কিত জানিয়ে সুজন বলেন, আমাদের এখন একটাই চাওয়া যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরত যাওয়া।
লেবাননের আর্থিক অবস্থা ভালো না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে দূতাবাসকে জানিয়েছি বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে আমাদের যেন নিয়ে যায়।
দূতাবাস এ বিষয়ে সহায়তা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে অনেকে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছে এবং আমরা আশা করি সরকার দ্রুততার সঙ্গে একটি ব্যবস্থা করবে।