রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৫ অপরাহ্ন

বাজারে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০২৩
বাজারে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম গত কয়েক মাস ধরেই চড়া। মাঝে দফায় দফায় বেড়েছে সব ধরনের শাক-সবজির দাম। তবে গত দুয়েক সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লারসহ সব ধরনের মুরগির দাম। মাছের বাজারেও নেই স্বস্তি। এতে বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

রাজধানীর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে যেখানে পটল বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি দরে, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকায়, ৮০ টাকার বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, ৮০ টাকার ঝিঙে ৬০ টাকায়, ৮০ টাকার করলা ৭০ টাকায়, ৭০ টাকার কাঁকরোল রকমভেদে ৬০ টাকা, ৮০ টাকার কচুরমুখি ৭০ টাকা, ৫০ টাকার লাউ ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা থেকে নেমে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ঢেঁড়স আগের মতোই ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় (কাটা পিস), ফুলকপি ৫০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা কেজি, চাল কমুড়া প্রতি পিস ৫০ টাকা, সিম ২০০ টাকা কেজি, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১৬০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৬০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে দাম বেড়েছে টমেটোর। ভারতীয় টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে আর দেশি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজিতে। কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গাজর ১৪০ টাকা কেজি, আলু ৪০ টাকা কেজি, দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকা কেজি করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে। টমেটো আর কাঁচা মরিচ ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে।

ক্রেতা কামরুল ইসলাম বলেন, সবজিতের স্বস্তি বলা যাবে না। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কম।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাঙাশের কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি আকারের তেলাপিয়ার কেজি ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাস দেড়েক আগেও এ দুই জাতের মাছের দাম ছিল যথাক্রমে ১৮০ থেকে ২০০ এবং ২২০ থেকে ২২০ টাকা। এ ছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে সিলভার কার্প ২০০ থেকে ২৬০ টাকা এবং নলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা দরে।

গত এক মাসের ব্যবধানে মাঝারি আকারের রুই-কাতলা কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকায়। বড় আকারের রুই-কাতলা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাবদা, ট্যাংরা জাতীয় মাছের দামও বাড়তি। পাবদার কেজি মানভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ট্যাংরা মাছের কেজি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মাছ বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, এখন ইলিশ মাছ নদীতে কম ধরা পড়ছে এ কারণে দাম বেশি। আড়তে অনেক বেশি দাম হওয়ায় অনেকেই মাছ আনার সাহস করছেন না। কারণ আনার পর যদি বেশি দামে ক্রেতা না কেনেন।

গত সপ্তাহেও এ বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়, সোনালি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় ও লেয়ার ৩৩০ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। এদিকে গত সপ্তাহে আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতিপিস হাঁস এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। কবুতর বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা প্রতিপিস।

গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস ৭৮০ টাকা কেজি। খাসির মাংসও ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে একই দাম ছিল।

ব্রয়লার লাল ডিমের বাজারটা ওঠানামা করছে। বাকি সব ডিমের দাম ঠিক আছে। ব্রয়লার লাল ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়েছে। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে হালি ৭০ টাকা, ডজন ২১০ টাকায়, দেশি মুরগির ডমের হালি ৮০ টাকা, ডজন ২৪০ টাকা। ব্রয়লার সাদা হালি ৪৫ টাকা, ডজন ১৩৫ টাকা, ব্রয়লার লাল হালি ৫০ টাকা, ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করলেও দেশের বাজারে খুব বেশি প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। মোটা চালের দাম দুই সপ্তাহ আগেই কেজিতে ২ টাকার মতো বেড়ে ৫০ থেকে ৫২ টাকায় উঠেছিল। সে দাম এখনও বহাল। এছাড়া মাঝারি আকারের চাল ৫৪ থেকে ৫৮ এবং চিকন চালের কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তুলনামূলক স্থির আছে সবজির বাজার। বেশিরভাগ সবজি কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। তবে করলা ও গাজরসহ কয়েকটি সবজির দাম দেখা গেছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা।

সোহাগি আক্তার নামে এক ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, গত সপ্তাহে একটা পণ্যের দাম কমছে তো আজ বাড়ছে। আর কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে আর কমছে না। সে তুলনায় আমাদের আয় বাড়ছে না, এভাবে দরদাম বাড়ায় আমাদের টিকে থাক কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

বাজার করতে আসা হেদায়েত উল্লাহ বলেন, মাছ-মুরগির দামের কারণে বাজার করতে এসে প্রতিদিন অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু না খেয়ে তো থাকা যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে। এখন ডেঙ্গুর সিজন চলছে। মানুষের একটু বাড়তি প্রোটিন প্রয়োজন। কিন্তু মাছ-মাংসের দামের কারণে হিসাব করে বাজার করতে হচ্ছে। দাম কিছুটা কম হলে স্বস্তিতে বাজার করতে পারতাম।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া