যাত্রীরা জানেনই না যে ট্রেনে ভ্রমণ করার সময় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ট্রেন পরিচালকের কাছে ওষুধ থাকে। ট্রেনে কোনো যাত্রীকে চিকিৎসা সেবা দিতেও দেখেননি কেউ।

অথচ প্রতি বছর কোটি টাকার ওষুধ ফেলে দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দেয়া এই ওষুধ যাত্রীদের না দিয়ে ফেলে রাখায় এমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে রাষ্ট্র।

বিষয়টি স্বীকার করে রেলওয়ে বলছে, যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবাকে কার্যকরী করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন তারা।

জানা গেছে, প্রতিটি চলন্ত ট্রেনে রেলযাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্রিটিশ আমল থেকেই ট্রেনে রাখা হয় ফাস্ট এইড বক্স। ট্রেন পরিচালকদের কাছে সংরক্ষিত থাকে প্রাথমিক চিকিৎসার এসব সামগ্রী। কিন্তু যাত্রীরা জানান, কখনও কাউকেই তারা পেতে দেখেননি এমন স্বাস্থ্যসেবা।

এক যাত্রী জানান, ২২ বছর ধরে এই ট্রেনে যাওয়া-আসা করি। ফাস্ট এইড বক্স বা সে ধরনের কোনো সেবা আমার চোখে পড়েনি।

সারা দেশে রেলের এমন ফাস্ট এইড বক্স রয়েছে প্রায় ১২০০। বছরে চারবার পরিবর্তন করে দেয়া হয় ওষুধ। এতে খরচ হয় প্রায় কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মাসের পর মাস ট্রেন পরিচালকরা বন্ধই রাখেন ফাস্ট এইড বক্স। ফলে ফেলে দিতে হয় মেয়াদোত্তীর্ণ কোটি টাকার ওষুধ।

কমলাপুরে ট্রেনের এক কর্মচারী জানান, বাক্স ৬ মাস ধরে বন্ধই আছে, এখনও খুলি নাই। আরেক কর্মচারী বলেন, অনেক ওষুধ অব্যবহৃত থেকে যায়, মেয়াদ শেষে সেগুলো ফেলে দিতে হয়।

প্রচার প্রচারণার অভাব আর ট্রেন পরিচালকদের উদাসীনতার কারণেই নষ্ট হচ্ছে সরকারি সম্পদ এমন ভাষ্য ঢাকা বিভাগ রেলওয়ের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইবনে শফি আব্দুল আহাদের।

এসব অভিযোগ স্বীকার করে ফার্স্ট এইড বক্স যাত্রী সেবায় কার্যকর করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে রেলওয়ে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে স্বাস্থ্যবিভাগের প্রধান সমন্বয়ক এ কে এম আব্দুল্লাহ আল বাকি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো অনিয়ম থাকতে পারে, কিন্তু বৃহৎ ক্ষেত্রে তেমন কোনো অনিয়ম আমাদের চোখে ধরা পড়েনি। আমরা অসামঞ্জস্য দূর করার চেষ্টা করবো।

করোনার এই সময় রেলের ফাস্ট এইড বক্স সেবাকে কার্যকর করলে যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা আরও সুরক্ষিত হবে বলে মত সাধারণ যাত্রীদের।