বরিশাল জেলা প্রতিনিধি :
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম ওরফে হাতকাটা মামুন (৪০) নামে এক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) রাত আটটার দিকে নিহতের নিজ এলাকা ইছাপুর গ্রামের বালুমহল এলাকার একটি চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
মামুন এই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুবারের সদস্য (মেম্বার) এবং ভাতশালা গ্রামের মালেক হাওলাদারের ছেলে। ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে বিভিন্ন অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা এবং বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা, গুম, নারী নির্যাতন এবং অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ ২২টি মামলা রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা করে নিহতের চাচাত ভাই মাইনুল ইসলাম সুজন বলেন, রাত আটটার দিকে দুটি সিএনজি ও তিনটি মোটরসাইকেলে করে হেলমেট ও মাস্ক পরে আসা দুর্বৃত্তরা মামুনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, নিহত মামুন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধারাবাহিক তিনবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। এ কারণে একবার তার হাত কেটে নেওয়া হয়। পায়ের রগ কাটারও চেষ্টা করা হয়। এছাড়া বালুমহলকে কেন্দ্র করে মামুনের সঙ্গে যাদের দ্বন্দ্ব ছিল, হত্যাকাণ্ডে তাদেরও সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।
ভাতশালার গ্রাম পুলিশ আব্দুর রহিমের উদ্ধৃতি দিয়ে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইছাপুর থেকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের ৮-১০ জনের একটি দল মামুনের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।
চেয়ারম্যান শফিকুল আরও বলেন, ‘সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল সোনাপুরা গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মোল্লাবাড়ি ঘেরাও করে রনি মোল্লা নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছিল মামুন। ২০১৬ সালে ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন সিকদারকে হত্যা করে মামুন ও তার সহযোগীরা। তার বিরুদ্ধে এমন নানা ঘটনায় মামলা হয়েছে। প্রতিশোধ নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ।’ তবে কারা তার প্রতিপক্ষ জানতে চাইলে তাদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি চেয়ারম্যান।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাকসুদুর রহমান বলেন, মামুনকে কে বা কারা হত্যা করেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হবে। মামুনের বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, নারী নির্যাতন এবং অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ ২২টি মামলা রয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। একইসঙ্গে ঘটনায় যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করবে পুলিশ।