বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন

বাইকার ফারহানার বিয়ে হয়েছে ৩ বছর আগেই

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০
বাইকার ফারহানার বিয়ে হয়েছে ৩ বছর আগেই
হায়ে হলুদের আসরে ফারহানা

বিয়ের অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণ করতে না পারায় ছেলে জন্মের পর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গায়ে হলুদের দিন শহরে বাইক র‌্যালি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ফারহানার বিয়ে হয়েছে আরো তিন বছর আগে। দেড় মাস আগে তার কোলজুড়ে এসেছে এক ছেলে শিশু সন্তানও। আর সে অনুষ্ঠানকে ঘিরেই শখ পূরণ করেন এই লেডি বাইকার।

ফারহানার এ কাজকে অনেকটা ভালোভাবেই দেখছেন বন্ধু ও প্রতিবেশীরা। তাদের দাবি ফারহানা স্বাধীনচেতা মানুষ। কিন্তু নেটিজেনরা তার ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন।

ফারহানার বান্ধবী নওরীন মোক্তাকি জয়া বলেন, যেহেতু ফারহানা বাইক চালাতে পারে তাই শখ ছিল নিজের বিয়েতে বাইক রাইডিং করার। সে শো-আপ চায়নি। নেটিজেনরা বানোয়াট কথা বলে তাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছে।

জয়া আরো বলেন, ফারহানার তিন বছর আগেই বিয়ে হয়েছে। এক বাচ্চার মা সে। গত ৩০ জুন ওর একটি ছেলে সন্তান হয়েছে। বিয়ের সময় অনুষ্ঠান করতে পারেনি, কেবল কলমা হয়েছিল। তবে ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা ছিল। এতদিন পর বিয়ের অনুষ্ঠান করছে, সেখানে সে তার শখ পূরণ করেছে তাতে-অন্যদের সমস্যাটা কি?

জয়া বলেন, দেশের মানুষ রাইড শেয়ারে মেয়ে চালকদের সাথে বসতে পারে। অথচ ফারহান রাইডিংকে সহ্য করতে পারছে না। এটা সংকীর্ণতা।

আরও পড়ুন : কনে ফারাহানা মোটরসাইকেল চালিয়ে গায়ে হলুদের আসরে

ফারহানার আরেক বন্ধু তরু খান বলেন, ফারহানা কলেজ থেকে আমাদের সাথেও বাইক চালাতো। তার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে আমরা বন্ধুরা ১৫/২০টি মোটরসাইকেল নিয়ে শহর ঘুরেছি। এতে দোষ কোথায়। লোকজন নেগেটিভ মন্তব্য করছে। খারাপ লাগছে। আমাদের প্রত্যাশা প্রত্যেকে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেবে।

তিন বছর আগে পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন যশোর শহরের সার্কিট হাউজ এলাকার মেয়ে ফারহানা আফরোজ। চলতি মাসে বিয়ের অনুষ্ঠানে গায়ে হলুদে শহরজুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও সাথীদের নিয়ে বাইক র‌্যালি (মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা) করেন তিনি। যার ছবি ও ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ফারহানা আফরোজ বলেন, সবাই নেচে-গেয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান উদযাপন করেছি। আমি যেহেতু বাইক চালাতে পারি তাই বাইক চালিয়ে অনুষ্ঠান করেছি। ব্যতিক্রমী কিছু করার ভাবনা থেকেই এমন আয়োজন। এটি আমার নিজস্ব উদ্যোগে করেছি। অনেক আনন্দ করেছি বন্ধু-বান্ধব ও সাথীরা।

তিনি আরো বলেন, ২০০৭ সাল থেকে বাইক চালাই। মূলত বাড়িতে সাইকেল ও প্রাইভেটকার চালানো শেখা হয় ছোট বেলাতেই। বাবার মোটরসাইকেলটিও চালানোর একটা ঝোঁক ছিল। তাই বাবার অজান্তেই কোনো প্রশিক্ষক ছাড়াই মোটরসাইকেল চালানো শিখি। ২০১৩ সালে ঢাকায় আসার পর বন্ধুদের বাইকে হাত পাকাই। এরপর নিজে স্কুটি কিনি। ওই স্কুটিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করি।

ফারহানা বলেন, বাইক র‌্যালির ছবি ফেসবুকে আসার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন। তারা আমার বাইক চালানোর বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া