Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের যেতে বাধা নেই : খুরশিদ আলম

পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর খুরশিদ আলম বলেন, সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে যেতে বাধা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে – এটা মিথ্যা প্রচার। আমরা তথ্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমাদের তিনজন কর্মকর্তাকে শুধু তথ্য দেওয়ার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের চেম্বার ভবন মিলনায়তনে এক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ। কে বললো ভাই? বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য দেওয়ার জন্য তিন জন মুখপাত্র নিয়োগ দিয়েছি। আপনার তো তথ্যের দরকার। তথ্যের দরকার হলে তথ্যের জন্য ১০০ বার যাবেন। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে একজন করে মুখপাত্র থাকে। সবার তো কথা বলার দরকার নাই। তিন জন মুখপাত্র আছে। তাদের কাছে যাবেন। সেখানে বসার যায়গা আছে। চায়ের ব্যবস্থা আছে। তারা যদি আপনাকে সেটিসফাই (সন্তুষ্ট) না করতে পারে আমরা চার জন ডেপুটি গভর্নর আছি- আমরা উত্তর দেবো। সমস্যা কোথায়? তাও বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশ নিষেধ।’

তিনি বলেন, ‘অবাধ বলতে কী? অবাধে কোথায় যায়? আপনার একটা প্রাইভেট কোম্পানি কি আরেকটি কোম্পানিকে অবাধে কোনও কিছু দেবে? জার্নালিস্টকে দেবে যতই বন্ধু হন? অ্যাবসার্ড (অবাস্তব)। পৃথিবীর কোনও দেশে নাই। তাহলে আপনি বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে আপনারা অবাধে যেতে চান। আমিতো যেতে নিষেধ করিনি। আপনি তো যান না। আমার লোকজন আপনার জন্য রেডি হয়ে আছে। যদি কোনও কর্মকর্তার কাছে একাই যেতে চান, যান। ধরুন আমার কাছে একাই আসতে চান, আসুন। যেটা সিক্রেসি আইনে কাভার করে না। যতদূর খোলামেলা বলা যায় তারা বলে দেবে। কিন্তু আপনি রাষ্ট্রীয় সিক্রেসির তথ্য চাইবেন সেটা তো পারমিট করে না কেউ।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে খুরশিদ আলম বলেন, আলটিমেটটলি (মূলত) আপনার উদ্দেশ্য দেশটার মঙ্গল আমাদেরও তাই। দেশটা হলো সবার। বঙ্গবন্ধু এটাই বলেছিলেন। এ দেশের মেহনতি মানুষের মুক্তি। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন, আমি ১৭টা ডিপার্টমেন্ট চালাতে হিমশিম খাই। আর প্রধানমন্ত্রী দেশ-বিদেশ সামলাচ্ছেন। কি পরিমাণ পরিশ্রম করছেন তিনি ভাবতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা ব্যাংকের ম্যানেজার পোস্টিং দিয়ে বসে আছি। সে কী করছে না করছে আমরা সুপারভাইজ করছি না। এটা চলবে না। এ বিষয়ে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। ব্যবহারে সফট কিন্তু নিজেকে কঠোর করতে হবে। এটা সেন্ট্রাল ব্যাংকের মেসেজ।

ব্যাংকারদের উদ্দেশে ডেপুটি গভর্নর বলেন, অর্থনীতি দিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের। সার্ভিস চার্জ কাটার আগে গ্রাহকদের মেসেজ দিন। আপনারা টিম পাঠাবেন। ব্যাংক ঋণ যদি ঠিক না থাকে তাহলে সমস্যা। অর্থনীতির ব্লাড হলো ফাইন্যান্স সেক্টর। সুতরাং আপনাদেরকে সরকারের ট্যাক্স যেমন আদায় করতে হবে গ্রাহক থেকে আবার তারা যেন হ্যারাস না হন। তারা যাতে অসন্তুষ্ট না হন। বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের কাছে রোল মোডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পেছনে তাকানোর সময় নেই। মানুষের আয় বেড়েছে। অনেকে না জেনে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এবার (২০২৪-২৫ অর্থবছর) বাজেট হচ্ছে ৮ লাখ কোটি টাকার। বাজেট তো আর এমনি এমনি হয় না। মেগা প্রজেক্ট হচ্ছে। পদ্মা সেতু করেছি আমরা। অপপ্রচারকে আপনারা কেউ পাত্তা দেবেন না। আপনারা তথ্যভাণ্ডার নিয়ে কথা বলবেন। রেমিটেন্স (প্রবাহ) আবার ফিরেছে, বাড়ছে। যারা অপ্রচার চালাচ্ছে তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। কোথায় আমাদের সমস্যা? তবে উদীয়মান অর্থনীতির নানা চ্যালেঞ্জ থাকে। এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। শ্রীলংকা কোথায় গিয়েছিল। আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গাপুরের চেয়ে পাঁচগুণ বড় আমাদের অর্থনীতি, নেপালের চেয়ে সাতগুণ বড়, ভুটানের চেয়েও বড়। আমরা দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। খেলাপি ঋণের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক আবু হেনা হূমায়ূন কবীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নূরুল আমিন ও রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক লিজা ফাহমিদা ও শায়েমা ইসলাম, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাফিউজ্জামান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের যেতে বাধা নেই : খুরশিদ আলম

প্রকাশের সময় : ১০:৪২:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি : 

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর খুরশিদ আলম বলেন, সাংবাদিকদের বাংলাদেশ ব্যাংকে যেতে বাধা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে – এটা মিথ্যা প্রচার। আমরা তথ্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমাদের তিনজন কর্মকর্তাকে শুধু তথ্য দেওয়ার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের চেম্বার ভবন মিলনায়তনে এক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, ‘বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ। কে বললো ভাই? বাংলাদেশ ব্যাংকে তথ্য দেওয়ার জন্য তিন জন মুখপাত্র নিয়োগ দিয়েছি। আপনার তো তথ্যের দরকার। তথ্যের দরকার হলে তথ্যের জন্য ১০০ বার যাবেন। প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে একজন করে মুখপাত্র থাকে। সবার তো কথা বলার দরকার নাই। তিন জন মুখপাত্র আছে। তাদের কাছে যাবেন। সেখানে বসার যায়গা আছে। চায়ের ব্যবস্থা আছে। তারা যদি আপনাকে সেটিসফাই (সন্তুষ্ট) না করতে পারে আমরা চার জন ডেপুটি গভর্নর আছি- আমরা উত্তর দেবো। সমস্যা কোথায়? তাও বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশ নিষেধ।’

তিনি বলেন, ‘অবাধ বলতে কী? অবাধে কোথায় যায়? আপনার একটা প্রাইভেট কোম্পানি কি আরেকটি কোম্পানিকে অবাধে কোনও কিছু দেবে? জার্নালিস্টকে দেবে যতই বন্ধু হন? অ্যাবসার্ড (অবাস্তব)। পৃথিবীর কোনও দেশে নাই। তাহলে আপনি বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে আপনারা অবাধে যেতে চান। আমিতো যেতে নিষেধ করিনি। আপনি তো যান না। আমার লোকজন আপনার জন্য রেডি হয়ে আছে। যদি কোনও কর্মকর্তার কাছে একাই যেতে চান, যান। ধরুন আমার কাছে একাই আসতে চান, আসুন। যেটা সিক্রেসি আইনে কাভার করে না। যতদূর খোলামেলা বলা যায় তারা বলে দেবে। কিন্তু আপনি রাষ্ট্রীয় সিক্রেসির তথ্য চাইবেন সেটা তো পারমিট করে না কেউ।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে খুরশিদ আলম বলেন, আলটিমেটটলি (মূলত) আপনার উদ্দেশ্য দেশটার মঙ্গল আমাদেরও তাই। দেশটা হলো সবার। বঙ্গবন্ধু এটাই বলেছিলেন। এ দেশের মেহনতি মানুষের মুক্তি। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে দেখেন, আমি ১৭টা ডিপার্টমেন্ট চালাতে হিমশিম খাই। আর প্রধানমন্ত্রী দেশ-বিদেশ সামলাচ্ছেন। কি পরিমাণ পরিশ্রম করছেন তিনি ভাবতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা ব্যাংকের ম্যানেজার পোস্টিং দিয়ে বসে আছি। সে কী করছে না করছে আমরা সুপারভাইজ করছি না। এটা চলবে না। এ বিষয়ে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। ব্যবহারে সফট কিন্তু নিজেকে কঠোর করতে হবে। এটা সেন্ট্রাল ব্যাংকের মেসেজ।

ব্যাংকারদের উদ্দেশে ডেপুটি গভর্নর বলেন, অর্থনীতি দিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের। সার্ভিস চার্জ কাটার আগে গ্রাহকদের মেসেজ দিন। আপনারা টিম পাঠাবেন। ব্যাংক ঋণ যদি ঠিক না থাকে তাহলে সমস্যা। অর্থনীতির ব্লাড হলো ফাইন্যান্স সেক্টর। সুতরাং আপনাদেরকে সরকারের ট্যাক্স যেমন আদায় করতে হবে গ্রাহক থেকে আবার তারা যেন হ্যারাস না হন। তারা যাতে অসন্তুষ্ট না হন। বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের কাছে রোল মোডেল হিসেবে দাঁড়িয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পেছনে তাকানোর সময় নেই। মানুষের আয় বেড়েছে। অনেকে না জেনে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এবার (২০২৪-২৫ অর্থবছর) বাজেট হচ্ছে ৮ লাখ কোটি টাকার। বাজেট তো আর এমনি এমনি হয় না। মেগা প্রজেক্ট হচ্ছে। পদ্মা সেতু করেছি আমরা। অপপ্রচারকে আপনারা কেউ পাত্তা দেবেন না। আপনারা তথ্যভাণ্ডার নিয়ে কথা বলবেন। রেমিটেন্স (প্রবাহ) আবার ফিরেছে, বাড়ছে। যারা অপ্রচার চালাচ্ছে তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। কোথায় আমাদের সমস্যা? তবে উদীয়মান অর্থনীতির নানা চ্যালেঞ্জ থাকে। এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। শ্রীলংকা কোথায় গিয়েছিল। আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গাপুরের চেয়ে পাঁচগুণ বড় আমাদের অর্থনীতি, নেপালের চেয়ে সাতগুণ বড়, ভুটানের চেয়েও বড়। আমরা দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কোনো সমস্যা নেই। খেলাপি ঋণের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক আবু হেনা হূমায়ূন কবীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নূরুল আমিন ও রুহুল আমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক লিজা ফাহমিদা ও শায়েমা ইসলাম, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাফিউজ্জামান।