Dhaka শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, সাংবাদিকসহ আহত ২৫

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে বরিশালে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে চার সাংবাদিকসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে শহরের সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে ও জজ কোর্টের সামনে ফজলুল হক এভিনিউতে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থল থেকে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, বেলা ১১টার পর কাঠপট্টি সড়কের মুখে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ শুরুতে বাধা দেয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সে সময় বেশ কয়েকজন অভিভাবকও এই আন্দোলন কর্মসূচিতে ছিল। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাদানুবাদের এক পর্যায়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ টানাহেঁচড়া করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ সিটি কলেজের গলির মুখে শিক্ষার্থীদের আটকে রাখে। পরে কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এক জোট হয়ে সদর রোডে অবস্থান করলে পুলিশ শুরুতে তাদের ধাওয়া দেয় পরে আচমকা লাঠিচার্জ শুরু করে।

লাঠিচার্জে আহত সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক যুগান্তরের ফটোসাংবাদিক শামীম আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক হৃদয় চন্দ্র শীল, এনটিভি টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক গোবিন্দ সাহা, অনলাইন পোর্টাল বার্তা টোয়েন্টিফোরের তুহিন খান। লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সাংবাদিকরাও সদর রোডে কিছু সময় অবস্থান করেন। আহত সাংবাদিকরা শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সাংবাদিকরাও সদর রোডে কিছু সময় অবস্থান করেন। আহত সাংবাদিকরা শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বরিশাল জজ কোর্টের সামনে, ফজলুল হক এভিনিউ সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশ দ্বিতীয় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, বেলা ১১টার পর নগরের সদর রোডসংলগ্ন কাঠপট্টি সড়কের মুখে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ প্রতিবাদ মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েকজন অভিভাবককেও এ কর্মসূচিতে একাত্ম হতে দেখা যায়। একপর্যায়ে বাধার মুখে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। পরে সিটি কলেজের গলির মুখে শিক্ষার্থীদের আটকে দেওয়া হয়। আরও শিক্ষার্থী এক জোট হয়ে সদর রোডে অবস্থান নিলে ধাওয়া দিয়ে তাঁদের ফকিরবাড়ির রোডে আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।

ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেন, পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় তাঁদের লক্ষ্য করে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এতে চার সাংবাদিকসহ ছয়জন আহত হন। এর প্রতিবাদে তাঁরা সদর রোড আটকে সড়কে বসে পড়েন। এতে সড়কটিতে কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেন, পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় তাঁদের লক্ষ্য করে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এতে চার সাংবাদিকসহ ছয়জন আহত হন। এর প্রতিবাদে তাঁরা সদর রোড আটকে সড়কে বসে পড়েন।

আন্দোলনকারীরা জানান, শিক্ষার্থীরা সদর রোড ত্যাগ করে ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে বরিশাল জেলা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নিলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে আবারও লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এ সময় অন্তত চারজন আহত হন। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, বেশ কিছু বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে। তারা কোর্ট এলাকায় নেমে অবরোধ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়েছে বলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে কোন শিক্ষার্থী নেই, তারা সবাই শিবির কর্মী। এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের আহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

আবহাওয়া

বরিশালে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, সাংবাদিকসহ আহত ২৫

প্রকাশের সময় : ০৩:৫২:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে বরিশালে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে চার সাংবাদিকসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৩১ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে শহরের সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে ও জজ কোর্টের সামনে ফজলুল হক এভিনিউতে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনাস্থল থেকে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, বেলা ১১টার পর কাঠপট্টি সড়কের মুখে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ শুরুতে বাধা দেয়।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সে সময় বেশ কয়েকজন অভিভাবকও এই আন্দোলন কর্মসূচিতে ছিল। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাদানুবাদের এক পর্যায়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ টানাহেঁচড়া করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ সিটি কলেজের গলির মুখে শিক্ষার্থীদের আটকে রাখে। পরে কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এক জোট হয়ে সদর রোডে অবস্থান করলে পুলিশ শুরুতে তাদের ধাওয়া দেয় পরে আচমকা লাঠিচার্জ শুরু করে।

লাঠিচার্জে আহত সাংবাদিকরা হলেন- দৈনিক যুগান্তরের ফটোসাংবাদিক শামীম আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক হৃদয় চন্দ্র শীল, এনটিভি টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক গোবিন্দ সাহা, অনলাইন পোর্টাল বার্তা টোয়েন্টিফোরের তুহিন খান। লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সাংবাদিকরাও সদর রোডে কিছু সময় অবস্থান করেন। আহত সাংবাদিকরা শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

লাঠিচার্জের প্রতিবাদে সাংবাদিকরাও সদর রোডে কিছু সময় অবস্থান করেন। আহত সাংবাদিকরা শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বরিশাল জজ কোর্টের সামনে, ফজলুল হক এভিনিউ সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় পুলিশ দ্বিতীয় দফায় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, বেলা ১১টার পর নগরের সদর রোডসংলগ্ন কাঠপট্টি সড়কের মুখে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ প্রতিবাদ মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কয়েকজন অভিভাবককেও এ কর্মসূচিতে একাত্ম হতে দেখা যায়। একপর্যায়ে বাধার মুখে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। পরে সিটি কলেজের গলির মুখে শিক্ষার্থীদের আটকে দেওয়া হয়। আরও শিক্ষার্থী এক জোট হয়ে সদর রোডে অবস্থান নিলে ধাওয়া দিয়ে তাঁদের ফকিরবাড়ির রোডে আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।

ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেন, পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় তাঁদের লক্ষ্য করে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এতে চার সাংবাদিকসহ ছয়জন আহত হন। এর প্রতিবাদে তাঁরা সদর রোড আটকে সড়কে বসে পড়েন। এতে সড়কটিতে কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিক অভিযোগ করেন, পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় তাঁদের লক্ষ্য করে লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এতে চার সাংবাদিকসহ ছয়জন আহত হন। এর প্রতিবাদে তাঁরা সদর রোড আটকে সড়কে বসে পড়েন।

আন্দোলনকারীরা জানান, শিক্ষার্থীরা সদর রোড ত্যাগ করে ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে বরিশাল জেলা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নিলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে আবারও লাঠিপেটা শুরু করে পুলিশ। এ সময় অন্তত চারজন আহত হন। সেখান থেকে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, বেশ কিছু বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে। তারা কোর্ট এলাকায় নেমে অবরোধ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়েছে বলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে কোন শিক্ষার্থী নেই, তারা সবাই শিবির কর্মী। এছাড়া তিনি সাংবাদিকদের আহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।