আম মৌসুমে পরিবহন সুবিধার জন্য চালু হওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী আলোচিত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস ‘ম্যাংগো স্পেশাল’ বন্ধ হয়ে গেছে।
গত ৫ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা ট্রেনটি প্রায় দেড় মাস (৪৭ দিন) চলার পর বুধবার (২২ জুলাই) থেকে বন্ধ হয়ে গেছে।
মূলত আমসহ বিভিন্ন কাঁচামাল ও রেলওয়ে পার্সেল হিসেবে গণ্য সকল পণ্য স্বল্প খরচে পরিবহনের জন্য রেলওয়ের এই বিশেষ আকর্ষণীয় উদ্যোগটি করোনাকালে সাড়া ফেললেও আমসহ অন্য পণ্য পরিবহন স্বল্পতার কারণে আপাতত বন্ধ করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগের কমার্শিয়াল ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সাজেদুল ইসলাম বলেন, ট্রেনটি উদ্বোধনের পর থেকে কখনও আশানুরূপ পণ্য পরিবহন করতে পারেনি। হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আম ছাড়া অন্য মালামালেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ করে দিতে হল ট্রেনটি। কোরবানি পশু পরিবহনে প্রস্তাবিত ‘ক্যাটেল ট্রেন’ এর ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম বলেন, ট্রেনটি চালু রাখার ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সকল পর্যায়ে চেষ্টার ঘাটতি ছিল না। কিন্তু আমের ভরা মৌসুমে চালু হবার পর ২২৫ টন ক্যাপাসিটির ট্রেনটি কখনও পূর্ণ পরিবহন সক্ষমতার পণ্য পায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে একদিন সর্বোচ্চ প্রায় ১০ টন বুকিং করা গেছে। গত কয়েক দিনসহ বেশিরভাগ দিনই ১ টন করেও বুকিং হয়নি। ঢাকা পর্যন্ত রাজশাহীসহ প্রায় সকল স্টেশনে ট্রেনে মালামাল পরিবহনের সুযোগ থাকলেও একমাত্র আড়ানী ব্যতিত কোনো স্টেশন থেকে কখনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মালামাল পরিবহন করা যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন সহকারী ম্যানেজার ওবাইদুল্লাহ বলেন, আম মৌসুম এখনও শেষ হয়নি। তবে বড় ব্যবসায়ীরা ট্রেনটির ব্যাপারে প্রথম থেকে খোঁজ নিলেও পরিবহনে যথেষ্ট সাড়া দেননি। কিছু সংখ্যক সাধারণ মানুষ ও ছোট ব্যবসায়ী কিছু ক্ষেত্রে অনেকটা কুরিয়ার সার্ভিসের বিকল্প হিসেবে ট্রেনটি ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেন, ন্যূনতম পণ্যও পরিবহন না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ ট্রেনটি বন্ধ করে দিয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এই ট্রেনে আম পরিবহন করতে হলে জেলার যে কোনো বাজার, বাগান বা মোকাম থেকে আম প্রথমে কোনো ট্রাক বা ছোট পরিবহনে স্টেশনে আনতে হতো। সেটির বুকিং খরচ দেবার পর কুলি খরচ দিয়ে ট্রেনে তুলতে হতো। আবার গন্তব্য স্টেশনে আবারও কুলি খরচ দিয়ে আনলোডের পর আবারও ট্রাক বা অন্য কোনো পরিবহনে তুলে মোকামে নিতে হতো। এতে সময়, পরিশ্রম এমনকি খরচও বেড়ে যায়। এছাড়া সব মিলিয়ে অনেক ঝক্কি। তারা বরং বিভিন্ন আকৃতির ট্রাকে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিবহন সুবিধের কথা জানান।