Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেসবুকে ‘হা-হা’ রিঅ্যাক্ট দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৬

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের কমলপুর মধ্যপাড়ার তরুণ ওমর মিয়ার একটি ফেসবুক পোস্টে হা হা রিঅ্যাক্ট দেন পূর্বপাড়ার আজিবর মিয়া। তাঁরা পূর্বপরিচিত। হা হা রিঅ্যাক্ট দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন ওমর। এ নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় কয়েকজন সমাজসচেতন তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে ডেকে এনে সমাধানও করে দেন।

কিন্তু সমাধান টেকে না। উভয় পক্ষ দা–বল্লম নিয়ে জড়িয়ে পড়ে তুমুল সংঘর্ষে। সংঘর্ষ থামাতে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের শরীর থেকে ঘাম ঝরে। চারজনকে আটক করতে হয়। সংঘর্ষে অন্তত ১২টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন।

ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকার মধ্যপাড়া ও পূর্বপাড়ার লোকজনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে সোমবার (১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে, চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কমলপুর এলাকাটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া। বাসস্ট্যান্ডের একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে কাজ করেন মধ্যপাড়ার আজিবুর। বাবার নাম আলাল মিয়া। পূর্বপাড়ার ওমর মিয়ার বাবার নাম রউফ মিয়া। হা হা রিঅ্যাক্টকে কেন্দ্র করে রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে থাকে। রাত নয়টার দিকে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে মিলিয়ে দেওয়া হয়। ৩০ মিনিট পর প্রথমে পূর্বপাড়ার লোকজন দা–বল্লম নিয়ে সড়কে বের হয়ে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে মধ্যপাড়ার লোকজনও দা–বল্লম নিয়ে এসে সংঘর্ষে জড়ান। কোনো পক্ষেরই নন, এমন কয়েকজনের দোকানও ভাঙচুর করা হয়।

কমলপুর এলাকাটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। সংঘর্ষ থামাতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল। তিনি বলেন, সংঘর্ষের ইস্যু লজ্জার। হা হা রিঅ্যাক্টকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে, ধারণার বাইরে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের বাইরেও সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানমালিকেরা জানান, বাসস্ট্যান্ড ঘিরে একাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয় আছে। কোনো ঘটনা ঘটলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা ভুক্তভোগী হন বেশি। গতকালের ঘটনায়ও একই অবস্থা হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার বাচ্চু মিয়া ও রিপন মিয়া বলেন, আমাদের কি অপরাধ। আমরা দোকান বন্ধ করে মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। এসে দেখি আমাদের দোকানের শাটারগুলো ভাঙা। প্রতিটি দোকানেরই একই অবস্থা। এরা সবাই কিশোরগ্যাংয়ের সদস্য। আমি ঘটনার বিচার দাবি করছি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী সোহাগ বলেন, একটি সামান্য ঘটনায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এই রোজা রমজানের মধ্যে এমন ঘটনা সত্যিই অপ্রত্যাশিত।

ভৈরব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সংবাদ শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় থানা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে। র‌্যাব সদস্যরা ৫/৬ জনকে আটক করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এছাড়া অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

ফেসবুকে ‘হা-হা’ রিঅ্যাক্ট দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৬

প্রকাশের সময় : ০৫:১৬:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

কিশোরগঞ্জের ভৈরব শহরের কমলপুর মধ্যপাড়ার তরুণ ওমর মিয়ার একটি ফেসবুক পোস্টে হা হা রিঅ্যাক্ট দেন পূর্বপাড়ার আজিবর মিয়া। তাঁরা পূর্বপরিচিত। হা হা রিঅ্যাক্ট দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন ওমর। এ নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্থানীয় কয়েকজন সমাজসচেতন তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে ডেকে এনে সমাধানও করে দেন।

কিন্তু সমাধান টেকে না। উভয় পক্ষ দা–বল্লম নিয়ে জড়িয়ে পড়ে তুমুল সংঘর্ষে। সংঘর্ষ থামাতে র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের শরীর থেকে ঘাম ঝরে। চারজনকে আটক করতে হয়। সংঘর্ষে অন্তত ১২টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন।

ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকার মধ্যপাড়া ও পূর্বপাড়ার লোকজনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে সোমবার (১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে, চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কমলপুর এলাকাটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া। বাসস্ট্যান্ডের একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে কাজ করেন মধ্যপাড়ার আজিবুর। বাবার নাম আলাল মিয়া। পূর্বপাড়ার ওমর মিয়ার বাবার নাম রউফ মিয়া। হা হা রিঅ্যাক্টকে কেন্দ্র করে রাত ৮টার পর থেকে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে থাকে। রাত নয়টার দিকে উভয় পক্ষকে ডেকে এনে মিলিয়ে দেওয়া হয়। ৩০ মিনিট পর প্রথমে পূর্বপাড়ার লোকজন দা–বল্লম নিয়ে সড়কে বের হয়ে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে মধ্যপাড়ার লোকজনও দা–বল্লম নিয়ে এসে সংঘর্ষে জড়ান। কোনো পক্ষেরই নন, এমন কয়েকজনের দোকানও ভাঙচুর করা হয়।

কমলপুর এলাকাটি পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন। সংঘর্ষ থামাতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিল। তিনি বলেন, সংঘর্ষের ইস্যু লজ্জার। হা হা রিঅ্যাক্টকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটে যেতে পারে, ধারণার বাইরে। সংঘর্ষে দুই পক্ষের বাইরেও সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানমালিকেরা জানান, বাসস্ট্যান্ড ঘিরে একাধিক কিশোর গ্যাং সক্রিয় আছে। কোনো ঘটনা ঘটলে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তোলে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা ভুক্তভোগী হন বেশি। গতকালের ঘটনায়ও একই অবস্থা হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার বাচ্চু মিয়া ও রিপন মিয়া বলেন, আমাদের কি অপরাধ। আমরা দোকান বন্ধ করে মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। এসে দেখি আমাদের দোকানের শাটারগুলো ভাঙা। প্রতিটি দোকানেরই একই অবস্থা। এরা সবাই কিশোরগ্যাংয়ের সদস্য। আমি ঘটনার বিচার দাবি করছি।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী সোহাগ বলেন, একটি সামান্য ঘটনায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এই রোজা রমজানের মধ্যে এমন ঘটনা সত্যিই অপ্রত্যাশিত।

ভৈরব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সংবাদ শুনেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় থানা পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে। র‌্যাব সদস্যরা ৫/৬ জনকে আটক করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এছাড়া অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।