বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে ধর্ষণের চেষ্টায় গ্রেপ্তার ৩

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
আপডেট : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
ফরিদপুরে প্রেমিকের সামনে প্রেমিকাকে ধর্ষণের চেষ্টায় গ্রেপ্তার ৩

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি : 

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে সাইফুর রহমানকে (২১) দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করেছে ভাঙ্গা থানার পুলিশ।

শুক্রবার (৩১ মে) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোডে ঘারুয়া ইউনিয়নের বামনকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গ্রেপ্তার হওয়া চেয়ারম্যানপুত্রের দুই সহযোগী হলেন, চান্দ্রা ইউনিয়নের গোয়ালদী গ্রামের তাহসিন মুন্সী (২০) ও মুন্না মিয়া (২০)।

এ ব্যাপারে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে শনিবার (১ জুন) সকালে ভাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই তিন তরুণকে গ্রেপ্তার করে।

থানা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার এক মাদরাসাছাত্রী ও তার বন্ধু একই উপজেলার গুপ্তেরকান্দি গ্রামের ইউনুস সরকারকে (২৪) নিয়ে ভ্যানযোগে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ইন্টারসেকশনে ঘুরতে আসে। ভাঙ্গা থেকে সন্ধ্যায় পুনরায় ভ্যানযোগে এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস রোড দিয়ে শিবচরের দিকে যাওয়ার সময় ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের বামনকান্দা নামকস্থানে ফাঁকা জায়গায় পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেল ভ্যানের গতিরোধ করে। এ সময় চেয়ারম্যান পুত্র সাইফুর রহমানসহ মোটরসাইকেল আরোহী আরও দুইজন ভ্যানচালককে মারধর করে। মাদরাসাছাত্রীর বন্ধু ইউনুস সরদারকেও মারধর করে। এরপর ওই কিশোরীকে রাস্তা থেকে পাশের ঝোপের আড়ালে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ওই সার্ভিস রোড দিয়ে ভাঙ্গা থানার টহল পুলিশের একটি দল যাচ্ছিল। পুলিশ চিৎকার শুনে গিয়ে জঙ্গল থেকে মাদরাসাছাত্রীকে উদ্ধার করে। এ সময় ধর্ষণ চেষ্টায় লিপ্ত থাকার অভিযোগে সাইফুর রহমানকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। তার অন্য দুই সহযোগী পালিয়ে যায়। পরে সাইফুর রহমানের স্বীকরোক্তি অনুযায়ী শনিবার সকাল ১০টার দিকে অপর দুই সহযোগী তাহসিন মুন্সী ও মুন্না মিয়াকে আটক করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ।

ওই শিক্ষার্থীর মা জানান, আমার মেয়ে শিবচর উপজেলার সূর্যনগর টি, এম একাডেমি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং পাশাপাশি কওমি মাদরাসায় লেখাপড়া করে। মাঝে মধ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেলাই কাজ শিখে। শুক্রবার রাতে আমি থানা থেকে সংবাদ পাই, রাত ১১টার সময় ভাঙ্গা থানায় আসি এবং আমার মেয়ের নিকট থেকে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ শুনি। এ ঘটনায় মামলা করছি। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে। আমি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। এ ব্যাপারে চান্দ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লা জানান, আমার ছেলে ভাঙ্গা থেকে বাড়ি আসার পথে একটা ছেলে একটা মেয়েকে ভ্যানে খারাপ দৃশ্য দেখে তাদেরকে সতর্ক করেছে। আমার ছেলে নম্র ভদ্র। ছেলেটা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।

ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লা তার ছেলে সাইফুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পুলিশ যা বলছে তা ঠিক না। আমার ছেলে ভাঙ্গা থেকে আসছিল। তখন পথে পুলিশ তাকে আটক করে এ মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে।

ভাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ বলেন, মেয়েটি তার বন্ধুকে নিয়ে ভাঙ্গা থেকে ঘুরে ভ্যানে করে শিবচর যাওয়ার সময় ভাঙ্গার বামনকান্দা এলাকায় ধর্ষণ চেষ্টার শিকার হয়। তাকে ভ্যান থেকে তুলে পাশের জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এর মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত সাইফুর রহমান ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করার মামলায় ওই তিন তরুণকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার (১ জুন) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া