গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা জামিনের পর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ১৫ মাস পর জামিনে মুক্তি পেলেন তিনি। তার জামিনের আদেশ রোববার সন্ধ্যার দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তিনি মুক্তি লাভ করেন। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে বোনের সঙ্গে বেরিয়ে আসেন তিনি।
খাদিজাতুল কুবরার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ।
মো. শাহজাহান আহমেদ জানান, জামিনের কাগজপত্র গতকাল রোববার কারাগারে পৌঁছায়। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সোমবার ভোরে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানানো হয়। কিন্তু খাদিজার স্বজনের কারাগারে পৌঁছাতে দেরি করায় ৯টার কিছু পরে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। কারাফটকে তাঁর বোন চিশতিয়া তাঁকে রিসিভ করেন। খাদিজাতুল কুবরা মুক্তি পেয়ে কারাগার থেকে বোনের সঙ্গে বের হয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
খাদিজার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা দুই মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ গত বৃহস্পতিবার বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। গত ১৬ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন। এই আদেশের ফলে তাঁর মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম আর খাদিজার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস।
এর আগে, চলতি বছরের ১০ জুলাই খাদিজার জামিন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি করেছিলেন আপিল বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
জবি ছাত্রী খাদিজার জামিন আপিলেও বহাল, মুক্তিতে আর বাধা নেইজবি ছাত্রী খাদিজার জামিন আপিলেও বহাল, মুক্তিতে আর বাধা নেই
খাদিজাতুল কুবরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগ এনে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। এর মধ্যে একটি রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অপরটি নিউমার্কেট থানায়।
গত বছরের মে মাসে দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে গত বছরের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন থেকে তিনি কারাগারে আছেন। আর দেলোয়ার বিদেশে পলাতক রয়েছেন।
বিচারিক আদালতে দুবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ হলে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান চেম্বার আদালত। পরে ১০ জুলাই আপিল বিভাগ জামিন স্থগিতের আদেশ বহাল রেখে শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি করেন।