জালিয়াতির অভিযোগে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি রাব্বি শাকিল ওরফে ডি জে শাকিলকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার অফিসে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১২শ’ কোটি টাকার ভূয়া চেকসহ জালিয়াতির বিভিন্ন সরঞ্জাম আটক করেছে পুলিশ।
বগুড়া ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আসলাম আলী বলেন, অভিযানকালে শাকিলের সুসজ্জিত অফিসকক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে এক হাজার ২০১ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকার ভুয়া চেক, ৫০টির বেশি টাকার অঙ্ক ছাড়া স্বাক্ষর করা চেক, সামরিক বাহিনীসহ সরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠানের ভুয়া নিয়োগপত্র ও চুক্তিনামা, জাল স্ট্যাম্প ও ডামি পেপার, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল কম্পানির ৬০টি সিম
আরও পড়ুন : জালিয়াতির মামলায় সাবরিনা-আরিফুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
কার্ড, তাদের নিজস্ব পরিচালিত ২২টি অনলাইন নিউজ পোর্টালের তথ্য ও আইডি কার্ড, দেশের বিখ্যাত কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ভুয়া নিয়োগপত্র ও পরিচয়পত্র; প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১২টি ফেসবুক আইডি, ৩৫টি ফেসবুক পেজ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিলসহ চিঠি তৈরির ফরম্যাটসহ ২ টেরাবাইটের হার্ডডিস্ক, প্রিন্টারসহ তিনটি সিপিইউ ও তিনটি মনিটর এবং পূবালী ব্যাংকে সচল সাতটি ব্যাংক হিসাব।
পুলিশ জানায়, শাকল কখনো প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কখনো সাংবাদিক-সম্পাদক। সহজে দেশি-বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দেওয়া, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি-সব টোপই ব্যবহার করেছেন তিনি।
পুলিশ জানায়, ১৫টি দেশের ৩২টি ব্যাংকের স্বীকৃত ১১৫টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর রয়েছে চুক্তি। জালিয়াতির অন্যতম কারিগর সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি রাব্বি শাকিল ওরফে ডি জে শাকিলের (৩২) অফিসে অভিযান চালানো হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জানান, শাকিলের অফিস থেকে পূবালী ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখার তাসবির এন্টারপ্রাইজের নামে ৫০০ কোটি টাকার একটি চেক, জাবের এন্টারপ্রাইজের নামে আরেকটি ৫০০ কোটি টাকার চেক, জনৈক শিহাব উদ্দিন আহম্মেদের নামে ২০০ কোটি টাকার আরেকটি চেক পাওয়া যায়।
মোটা অঙ্কের ব্যাংক লোনের আশায় তারিখ ছাড়া জামানত হিসেবে এই চেকগুলো প্রদান করেছেন পূবালী ব্যাংক টাঙ্গাইল প্রধান শাখার গ্রাহক (এসি নং : ০৪৭০৯০১০৪৪৬০৬) রাজলক্ষ্মী ট্রেডিং করপোরেশনের মালিক তাপস কুমার পাল।
মোট উদ্ধার হওয়া এক হাজার ২০১ কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকার চেকের মধ্যে বাকি এক কোটি ৭২ লাখ ১০ হাজার টাকার চেকগুলো অন্য সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের। অনেকে বলছেন, প্রতারণায় শাকিলের কাছে রিজেন্টের সাহেদও ফেল।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, বগুড়ার ভুক্তভোগী দুই যুবকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ইমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) বগুড়া সদর আমলি আদালতে তুলে তাঁদের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। বিচারক বিল্লাল হোসেন তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।