পাহাড় পর্বতের দেশ ইরান কোনো সমভূমি নয়, বরং একটি বন্ধুর ভূমি। বিশাল এলাকা জুড়ে সুউচ্চ পর্বতমালা, ঢালু পাদদেশ এবং সংকীর্ণ উপত্যকা ও গিরিপথ। আবার অদূরেই সমভূমি ও মরুময় অঞ্চল। সব মিলে প্রকৃতির অপরিসীম সৌন্দর্যের দেশ ইরান।
তবে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যে কেবল সবুজ শ্যামলিমা ও হরেক রঙের ফুলে শোভিত তা নয়, রঙিন মাটি ও পাহাড়-পর্বতও ইরানকে রঙিন করে রেখেছে।
ইরানের পাহাড়-পর্বত দক্ষিণ ইউরোপ ও এশিয়ার পাহাড়-পর্বতগুলো সৃষ্টি হওয়ার সময়কালের বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান। তৃতীয় ভূতাত্ত্বিক যুগের শেষ দিকে ভূমিকম্পের ফলে এসব পাহাড়-পর্বত তৈরি হয়েছে। তখন পাললিক শিলার ফাঁকে ফাঁকে গ্রানাইট পাথর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল। বফাক, জানজন ও গোলপায়গানে এবং তাবাস ও ইয়াজদের পথে সাদা ও গোলাপি গ্রানাইট পাথর এখনও মাথা উঁচু করে আছে।
অনেকের মতে, দেড় কোটি বছর আগে এগুলো সৃষ্টি হয়েছে। ইরানের অনেক জায়গাতেই দেখা যায় বিশাল এলাকা জুড়ে সুউচ্চ পর্বতমালা, ঢালু পাদদেশ এবং সংকীর্ণ উপত্যকা ও গিরিপথ, আবার অদূরেই সমভূমি ও মরুময় অঞ্চল। প্রকৃতপক্ষে ইরান ভূখণ্ডের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা পাহাড়-পর্বতে ঢেকে আছে। শত শত কিলোমিটার জুড়ে আলবোর্জ পর্বতমালার অবস্থান যেন ইরানের উত্তরাংশে একটি সুউচ্চ দেয়াল তৈরি করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন : গোপনে প্রেম নিবেদন-গল্প আড্ডা সংসার সবই করে ডলফিন
কেবল সুউচ্চ ও দুর্গম গিরিপথ হয়ে তা অতিক্রম করা যেতে পারে। তেমনি জাগ্রোস পর্বতমালায় রয়েছে বহু উঁচু ও সমান্তরাল পাহাড়- যার মাঝে রয়েছে অত্যন্ত নিচু ও খাদসংকুল উপত্যকা ও ঢালু পাদদেশ। জাগ্রোস পর্বতমালা ইরানের ভেতরের এলাকাগুলোকে পারস্য উপসাগরের উপকূল থেকে আলাদা করে রেখেছে। কেবল আঁকাবাঁকা উপত্যকাগুলো এবং লাখ লাখ বছরে সৃষ্টি হওয়া পার্বত্য নদীগুলোর মধ্য দিয়েই এসব পাহাড়-পর্বত অতিক্রম করা যেতে পারে।
কেউ যদি ফটোগ্রাফিতে উৎসাহী কিংবা সাধারণ প্রকৃতিপ্রেমী হন এবং এমন কোনো বিস্ময়কর জায়গা খুঁজছেন যেখানে ভিন্ন কোনো গ্রহে হাঁটার মতো আনন্দ পাওয়া যাবে তাহলে তার জন্য ইরানের উত্তর খোসারান প্রদেশের রঙিন আলাদাগলার পর্বতমালা একটি বিকল্প হতে পারে।