দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণকাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। করোনায় বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকায় এখন রাতদিন কাজ চলছে বলে ঢাকা ম্যাস পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সামগ্রিকভাবে ৪৯ দশমিক ১৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে এবং কভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। ঢাকা ম্যাস পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক গতকাল এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে শ্রমিক, কারিগর, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্টরা দিন-রাত কাজ করায় ৪৯ দশমিক ১৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের মেট্রোরেল নির্মাণের দৃশ্যমান নির্মাণ অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৫০ শতাংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ অগ্রগতি ৪২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
তিনি বলেন, বর্তমানে মেট্রোরেলের উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের মধ্যে ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটারের ১০ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের অধীনে শহরে এমআরটি লাইন-৬-এর নির্মাণকাজ পুরোদমে চলছে।
আরও পড়ুন : ডিটিসিএ-এর কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ সেতুমন্ত্রীর
সিদ্দিক আশা প্রকাশ করেন, চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে কাজ এ গতিতে অব্যাহত থাকলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মেট্রোরেল প্রকল্প সম্পন্ন হতে পারে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত লাইন-৬ ট্র্যাক চালানোর জন্য জাপানে রেল কোচ নির্মাণ করা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কোচের শিপমেন্টটি অপেক্ষায় রয়েছে এবং শিপমেন্ট হবে।
এতে বলা হয়েছে, দিয়াবাড়ি থেকে মিরপুর সেকশন পর্যন্ত রেল ট্র্যাক স্থাপন করা হচ্ছে এবং সেখানে বৈদ্যুতিক লাইনও বসানো হয়েছে।
এছাড়া বলা হয়, ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর ২১ কিলোমিটার রুটে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে এবং সব স্টেশনে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে।
স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল।
সিদ্দিক বলেন, সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে শহরের মানুষ নির্ধারিত সময়ের আগেই স্বপ্নের মেট্রোরেলে দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিলের দিকে যেতে পারবেন। যেসব এলাকায় ভাইডাক্ট বসানো হয়েছে, সেখানে রেললাইন ও বিদ্যুতের লাইন বসানোর কাজ চলছে।
টেকনিশিয়ান এবং কর্মীরা বলেছেন, তারা সময়মতো প্রকল্পটি সম্পন্ন করার জন্য ‘২৪ ঘণ্টা’ কাজ করার সময় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছেন।
২১৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে মেট্রোরেল প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে জাপানের সাহায্য সংস্থা জাইকা ১৬৫ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে।