বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন

পরিস্থিতির উন্নতি হলেই দেশে আসবে মেট্রোর প্রথম ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শনিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২০
পরিস্থিতির উন্নতি হলেই দেশে আসবে মেট্রোর প্রথম ট্রেন
মেট্রো ট্রেনের ছবি

আগামী বছরের শেষ নাগাদ মেট্রোরেল চালুর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের প্রথম ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা মেট্রোরেল। বাংলাদেশে সরবরাহের জন্য এরই মধ্যে এক সেট ট্রেন প্রস্তুত করেছে জাপানের কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি কনসোর্টিয়াম।

করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ট্রেনটি আনার উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মকর্তারা।

মেট্রোরেলের লাইনটিতে যাত্রীসেবা দেয়ার জন্য কেনা হচ্ছে ২৪ সেট ট্রেন। ট্রেনগুলো সরবরাহ করবে জাপানের কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি কনসোর্টিয়াম।

ছয়টি যাত্রীবাহী কোচ সংবলিত মেট্রোরেলের প্রথম সেট ট্রেনের নির্মাণকাজ শেষ হয় চলতি বছরের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে। জাপানে আরো চার সেট ট্রেনের কাজ চলমান। চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন বাংলাদেশে সরবরাহ করবে কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি।

আরও পড়ুন : ১৬ আগস্ট থেকে চলবে ১৩ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন

বাকি ১৯ সেট ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশে আসবে। দাম, শুল্ক ও ভ্যাট মিলে ২৪ সেট ট্রেন বাংলাদেশে আনতে খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে এক সেট ট্রেনের দাম পড়ছে ১৭৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

আগামী বছরের শেষ নাগাদ মেট্রোরেল চালুর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। যদিও নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি (জুলাই পর্যন্ত) ৪৭ শতাংশ। করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি প্রকল্পটির কাজকে আরো শ্লথ করে দিয়েছে।

তার পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।

মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে আটটি আলাদা প্যাকেজে। এর মধ্যে প্যাকেজ-৮-এর মাধ্যমে রোলিং স্টক ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রকল্প কার্যালয়ের তথ্য বলছে, মেট্রোরেলের ২৪ সেট ট্রেন সরবরাহের জন্য ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট জাপানি প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি ও মিৎসুবিশির সঙ্গে চুক্তি করে ডিএমটিসিএল।



 

একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় প্রকল্পের বাস্তব কাজ। আর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি জাপানে শুরু হয় ট্রেনের বগি তৈরির কাজ। যাত্রীবাহী কোচ (কার বডি) তৈরির কাজ শুরু হয় একই বছরের এপ্রিলে।

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশির তৈরি করা ট্রেনগুলো চলবে দেড় হাজার ভোল্টের ডিসি বিদ্যুৎপ্রবাহে। যাত্রীবাহী কোচগুলোর বডি স্টেইনলেস স্টিলের। দুই পাশে বসার জন্য থাকবে লম্বালম্বি আসন।

প্রতিটি বগিতে থাকছে চারটি দরজা। একেকটি ট্রেনে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭৩৮ জন যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

দেশের প্রথম মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো কেমন হবে, তার একটা ধারণা দিতে এরই মধ্যে দেশে আনা হয়েছে একটি ‘মক আপ’ ট্রেন। উত্তরার দিয়াবাড়িতে অবস্থিত মেট্রোরেল ডিপোর এক্সিবিশন অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টারে ‘মক আপ’ ট্রেনটি স্থাপন করা হয়েছে।

এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাপানে গত এপ্রিলেই মেট্রোরেলের প্রথম ট্রেনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। জাপান ও বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ট্রেনটি বাংলাদেশে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।

দেশে আনার পর ‘ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট’ ও ‘ট্রায়াল রান’ করার কথা জানিয়েছেন তারা।

উত্তরা-মতিঝিল মেট্রো লাইনটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ।

এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা-আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

অন্যদিকে দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ।

লাইনটি এরই মধ্যে মতিঝিল থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সব মিলিয়ে ঢাকার প্রথম মেট্রো লাইনটির দৈর্ঘ্য হবে ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া