আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগের চেয়েও বেশি। সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে একের পর এক স্প্যান বসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারক করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
শুক্রবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনাবিষয়ক এক সভায় অংশ নিয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে একের পর এক স্প্যান বসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদারক করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। এরই মধ্যে মূল সেতুর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ছয়টি স্প্যান প্রস্তুত। পদ্মার পানিপ্রবাহের গতি কমলে আমরা স্প্যানগুলো বসাতে পারব। ৪২টি পিয়ারের কাজ শেষ হয়েছে। নদী শাসনে অগ্রগতি প্রায় ৭৪ ভাগ। এর আগেই মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের সংযোগ সড়ক এবং টোল প্লাজার কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগেরও বেশি। এখন সেতুর ওপর যানবাহন চলাচলের ডেক ও স্লাব স্থাপনের কাজ চলছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ মাইলফলক প্রজেক্টের সঙ্গে আপনারা সংযুক্ত থাকার জন্য আপনারা গর্ববোধ করবেন। সবাইকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানাই। প্রকল্পের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজ কেউ করবেন না। কারণ এটি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রকল্প।
আরও পড়ুন : পুরোদমে এগিয়ে চলেছে মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ
পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো আর্থিক সংকট নেই জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোনো আর্থিক সংকট নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে এ প্রকল্পে আর্থিক সংকট হবে না। বাজেটে পদ্মা সেতুর জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রয়েছে। নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সেতু নির্মাণের কাজ আজ এ পর্যায়ে এসেছে।
সব সমালোচনা পেছনে ফেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। আজ এগিয়ে চলছে সেতুর কাজ। পদ্মার দুপারজুড়ে বসেছে একের পর এক স্প্যান। ৪১টি স্পানের মধ্যে ৩১টি এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে চার হাজার ৬৫০ মিটার।
পৃথিবীর নদীগুলোর মধ্যে পদ্মা একটি আনপ্রেডিক্টেবল রিভার উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এখানে সয়েল কন্ডিশনগুলোসহ অন্যান্য বিষয়ে সময় সময় বদলায়। অতিসম্প্রতি কিছু স্প্যান স্থাপনের পরিকল্পনা তীব্র স্রোতের কারণে সম্ভব হয়নি। করোনাকালে এক মুহূর্তের জন্যও পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ থেমে থাকেনি। দেশের অন্যান্য উন্নয়ন গতিতে যখন ছন্দপতন তখনো সেতুর ওপর বসেছে একের পর এক স্প্যান।
করোনা মহামারীর শুরু থেকে প্রকল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী জনবল স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ এগিয়ে নেয়ার যে দক্ষতা দেখিয়েছে এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
তিনি জানান, ঢাকা থেকে মাওয়া এবং পাচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন যান চলাচলের জন্য। পদ্মা সেতু চালু হলে বদলে যাবে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতির চালচিত্র।