পদ্মার তাণ্ডবে বিলীন হওয়ার পথে পদ্মা সেতুর মূল কনস্টাকশন ইয়ার্ডের শেড। ইতোমধ্যে উত্তাল পদ্মা আঘাত হেনেছে সেতু প্রকল্পের কনস্টাকশন ইয়ার্ডে।
শুক্রবার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত পদ্মা তাণ্ডব চালিয়েছে সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।
সেই তাণ্ডবে তলিয়ে গেছে পদ্মাসেতুর সড়কপথের জন্য তৈরি করা প্রায় অর্ধশত রোড স্ল্যাব গার্ডার। তবে
অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে মূল কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের মূল শেড। যেখানে স্প্যানের মালামাল রাখা। ভাঙতে ভাঙতে এখন শেষ পর্যন্ত শেডে এসে ঠেকেছে। এটি চলে গেলে পদ্মাসেতুর সবচেয়ে বড় এই কারখানা বিলীন হয়ে যাবে পদ্মায়।
শনিবার (১ আগস্ট) পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, শুক্রবার হঠাৎ পদ্মা সেতুর মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটের কাছে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙতে ভাঙতে কারখানার ভেতরে ঢুকে যায় নদী। মুহূর্তে কয়েক শ’ ফুট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেখানে রাখা প্রিকাস্ট রোড স্ল্যাব তলিয়ে যায় নদীতে। ভাঙন তাণ্ডবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার ওপরে।
পদ্মাসেতুর একজন প্রকল্প কর্মকর্তা জানান, চোখের সামনে প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের একটি বড় অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে। ভাঙন ১১ ঘণ্টা পর রাত ১১টায় বন্ধ হয়। ফের ভাঙন শুরু হলে পদ্মাসেতুর কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থাকবে না। এমন অবস্থায় গেলে পদ্মাসেতুর সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
কারণ ইয়ার্ডে পদ্মাসেতুর ১০টি স্প্যান রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি শতভাগ প্রস্তুত। আর বাকিগুলো টুকরো টুকরো আকারে রয়েছে। এছাড়া আরও প্রচুর যন্ত্রপাতি আর শ্রমিকদের থাকার ঘর রয়েছে। যা এখন যেকোনো মুহূর্তে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
আরও পড়ুন : চীনের অর্থায়নে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড এখন মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করা হয়েছে। তবে আরও ক্ষতি হলে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে পড়তে পারে প্রকল্প। যেখানে ভাঙন শুরু হয়েছে সেটা কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের পেছনের অংশ। যে অংশে প্রিকাস্ট রোড সবগুলো রাখা ছিল।
মূল সেতুর সড়কপথ তৈরির জন্য ২৯১৭ টি রোডওয়ে স্ল্যাব লাগবে। এর মধ্যে ৭৫০টি স্থাপন করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য আগস্টের প্রথমার্ধে পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করবে। এর মধ্যে পানি নামতেও শুরু করেছিল পদ্মা সেতুর মাওয়াসহ কয়েকটি পয়েন্টে। এরমধ্যেই শুরু হয় ভয়াবহ ভাঙন।