ফের ভাঙন দেখা দিয়েছে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়ার তিন নম্বর ফেরিঘাট এলাকায়। শুক্রবার রাতে আকস্মিক পদ্মার ভাঙন শুরুর পর ঘাট এলাকার নানা স্থাপনাসহ ১০ একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। অন্যদিকে বন্ধ থাকার ৯ দিন পর শুক্রবার পরীক্ষামূলক চালু হলেও নাব্য সংকটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
পদ্মার উত্তাল স্রোতে শিমুলিয়া ঘাটসহ আশপাশের দোকানপাট, খাবার হোটেল বিলীন হয়ে যাচ্ছে; ভাঙনের কারণে ঘাট এলাকার স্থাপনা এবং আশেপাশের বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েও সারতে পারছেন না স্থানীয়রা।
বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য মো. নুরুল আলম বলেন, ভাঙন শুরু হওয়ার পর জিও ব্যাগ ফেলছি। এখন বর্ষাকাল, পানি অনেক বেশি; ফলে পার্মানেন্ট যে ব্যবস্থা সিটুপাইল বা সিট পাইলিং এখন এ অবস্থায় সম্ভব না। আমাদের কাছে ১০ হাজার জিও ব্যাগ মজুত আছে, সেগুলো ফেলছি। যদি আরও লাগে আমরা ব্যবস্থা করব।
তাছাড়া ফেরিঘাট, লঞ্চ ঘাটগুলোর কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে তার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। সার্ভে করার জন্য আমরা হাইড্রোগ্রাফির একটি টিমকে বলেছি। তারা আজই কাজ শুরু করে দেবে। এরপর আমরা জানতে পারব, এখানে পানির গভীরতা কতটুকু। যেখানে পানির গভীরতা বেশি সেখানে ভাঙনের ঝুঁকি বেশি থাকবে। সে এলাকায় বেশি করে জিও ব্যাগ ফেলতে হবে। সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির বলেন, নদীর একটা নিজস্ব গতি-প্রকৃতি আছে। এ নদী হঠাৎ করে ভাঙে কিংবা হঠাৎই এ ঘটনা ঘটে থাকে। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছন্নভাবে এটা হচ্ছে। এটা যেহেতু ঘাট বন্দর এলাকা, এ এলাকার ব্যাপারে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। অতি দ্রত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী হারিস আহম্মেদ পাটুরিয়ারী জানান, ‘কয়েক ঘণ্টার ভাঙনে ১০ একর এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র সাড়ে তিন একর। আর বিআইডব্লিউটিএ’র ২৯ একর জায়গার মধ্যে শিমুলিয়া বন্দরের সাড়ে ছয় একর জায়গা এখন পদ্মার পেটে। সকাল থেকে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন : শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ৯ দিন পর ফেরি চলাচল শুরু
অন্যদিকে নাব্য সংকটে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে বলে বিআইডব্লিউটিসির এজিএম মো. শফিকুল ইসলাম জানান। তিনি বলেন, বন্ধ থাকার ৯ দিন পর শুক্রবার পরীক্ষামূলক ফেরি চালু হয়। কিন্তু ফেরিগুলো ঠিকমতো চলাচল করতে পারছে না। শনিবার সকাল ৮টায় শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে যায় ফেরি কিশোরী ও কুমিল্লা। ফেরি দুটি মাঝ পদ্মা থেকে আবার শিমুলিয়া ঘাটে ফিরে আসে। পরবর্তীতে দেড় ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ৯টায় ফেরি দুটি আবার
শিমুলিয়া ঘাট থেকে রওয়ানা দিয়েছে। ঘাটে শতাধিক গাড়ি পারের অপেক্ষায় আটকা রয়েছে। এখন পাঁচটি ফেরি দিয়ে দিনের বেলা সীমিত আকারে ফেরি সার্ভিস সচল রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ জলাই তিন নম্বর ও ৬ আগস্ট চার নম্বর ঘাট বিলীন হয়ে যায়। পাশে পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ভাঙনের কবলে পরে ৩১ জুলাই।