কক্সবাজারে মেজর (অব:) সিনহা মো. রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর তার সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গী গ্রেফতার হয়েছেন। তারা দুজনেই এখন কারাগারে। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ওই দুই শিক্ষার্থীর জীবননাশের আশঙ্কার করছেন তাদের সহপাঠীরা। একই আশঙ্কা রয়েছে পরিবারের সদস্যদেরও।
গত ৩১ জুলাইয়ের ওই ঘটনার পর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত এবং শিপ্রা দেবনাথ।
শনিবার (৮ আগস্ট) এই দুই শিক্ষার্থীর দ্রুত মুক্তি দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকায় স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এর আগে বুধবারও তারা এ নিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
অন্যদিকে সাহেদুল ইসলাম সিফাতের মুক্তির দাবিতে বরগুনায় একটি মানববন্ধন শনিবার লাঠিচার্জ করে ভণ্ডুল করে দিয়েছে পুলিশ। সেই ঘটনায় স্থানীয় কয়েক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
সিনহা মো. রাশেদ খানের সাথে কক্সবাজারে ডকুমেন্টারি তৈরির সময় তিনজন সাথে ছিলেন। এরা হলেন, বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত এবং তাহসিন রিফাত নূর। এদের মধ্যে তাহসিন রিফাত নূরকে তাদের অভিভাবকের কাছে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বাকি দুইজন – শিপ্রা দেবনাথ এবং সাহেদুল ইসলাম সিফাত এখন কক্সবাজার কারাগারে রয়েছেন।
এর মধ্যে সাহেদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে দুটি মামলা এবং শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
এদিকে, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত এবং শিপ্রা দেবনাথের মুক্তির দাবিতে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের সামনে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন : মেজর (অব.) সিনহা রাশেদকে নিয়ে যা বললেন মা নাসিমা আখতার
সেখানে চারদফা দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানাউল কবীর সিদ্দিকী। এর মধ্যে রয়েছে ওই দুই শিক্ষার্থীর মুক্তি, মেজর (অব) সিনহা মো. রাশেদ খানের হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার, দুই শিক্ষার্থীকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি, দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সামাজিকভাবে নিরাপত্তা প্রদান।
সানাউল কবির সিদ্দিকী বিবিসি বাংলাকে বলেন, ”পুলিশের গুলিতে যদি একজন আর্মি মেজর নিহত হতে পারে, সেখানে সিফাত পুলিশের বিপক্ষে একজন রাজসাক্ষী। তাহলে পুলিশের হেফাজতে থেকে সে কীভাবে বিপন্ন নয়? অবশ্যই সে বিপন্ন।
একটি গোয়েন্দা সংস্থা ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনেও তাকে নিয়ে জীবন সংশয়ের আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার বা মাদক উদ্ধারের নাম করে রাতের অন্ধকারে যেকোনো কিছু করে ফেলা হতে পারে, সেটার সমূহ সম্ভাবনা আছে।”
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, যে মামলার কারণে এখন সিফাত এবং শিপ্রা কারাগারে রয়েছেন, যারা সেই অভিযোগ লিখেছেন, সেই মামলাকারীরাই (অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা) একই ঘটনায় এখন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছে। তাহলে সিফাত এবং শিপ্রার বিরুদ্ধে সেই মামলার গ্রহণযোগ্যতা কিভাবে থাকে?
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তিনি সাহেদুল ইসলাম শিফাত এবং শিপ্রা দেবনাথের মুক্তির ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করেন।