নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা জানান।
নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আলাচনার বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, খুব ভালো ভালো আলাপ হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জো বাইডেনকে বলেছেন, ‘আমি বাবা-মা, ভাইদের হারিয়েছি; পরিবারের সব লোককে হারিয়েছি। এখন বাংলাদেশের জনগণই আমরা পরিবার। তাদের মুখে দুবেলা ভাত, জীবনমানের উন্নয়নের জন্য আমি কাজ করছি। আমার এখন বিরাট পরিবার, ১৭০ মিলিয়নের পরিবার। তাদের আমি সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দিতে চাই। আমাদের স্বপ্ন একটি সুন্দর বাংলাদেশ। আমার একটাই জীবনের কাম্য, আমার দেশবাসীর মঙ্গল করা।’
সরকারপ্রধানের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কী বলেছেন, জানতে চাইলে মোমেন বলেন, তিনি বলেছেন, আমি জানি।
তাদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেগুলো নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, আমরা কখনও চাপের মুখে ছিলাম না। আমরা চাপের মধ্যে নাই। আমরা আগামী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুতরাং আমরা কোনো চাপের মধ্যে নেই। আপনারা (গণমাধ্যম) বরং চাপের মধ্যে আছেন। আপনারা (গণমাধ্যম) আমাদের চাপের মধ্যে ফেলতে চান।
এ সময় স্যাটেলাইট বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সুদের হার বেশি এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সার্ভিস ভালো হওয়ায় ফ্রান্সের সঙ্গে স্যাটেলাইট স্থাপনের চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : দ্যা ইয়ুথ পারসপেকটিভ’ শীর্ষক সেমিনারে দেশের অধিকাংশ মানুষ মার্কিন ভিসা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মার্কিন নতুন ভিসানীতি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে অনেক শিক্ষার্থীর যুক্তরাষ্ট্রে স্কলারশিপ থাকা সত্ত্বেও তাদের ভিসা বাতিল হচ্ছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সেটা যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে জিজ্ঞেস করুন। এটা আমাদের বিষয় না।
তিনি বলেন, তারা কী নিয়ম-নীতি করে এটা তাদের মাথাব্যথা, আমার না। ওইটা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকেই জিজ্ঞেস করেন।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের অধিকাংশ লোকজন এসব ভিসা নিয়ে খুব চিন্তিত নয়। কিছু মানুষভাবে কোন দেশে যাবে না যাবে। আমি যেটা করতে চাই আমাকে ভিসা দেবে ডেকে নিয়ে। আমি নিজেকে যথেষ্ট করে গড়ে তোলার আগে এটা প্রত্যাশা করতে পারি না। তারা কি করলো না করলো সেটা আমাদের বিষয় না।
মোমেন বলেন, একসময় ভারতবর্ষ ছিল মূল আকর্ষণ। এখন আর সে অবস্থা নেই। আমরা সেই বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে দূতাবাসগুলো আমাদের ডেকে ভিসা দেবে। মানুষের ন্যায্য অধিকার বাড়িতে পৌঁছে যাবে। পাসপোর্ট পেতে তিন সপ্তাহ লাগবে না। এয়ারপোর্টে এসে কোনো অসুবিধা হবে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ নয়। গত কয়েক বছরে স্থিতিশীলতা ও নেতৃত্বের পরিপক্বতার কারণে বাংলাদেশ অন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।