টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি :
টাঙ্গাইলের বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বংশাই নদী। সেই নদীরে ওপরে একটি পাকা সেতুর না থাকায় যেন দুঃখের শেষ নেই এ দুই উপজেলাসহ আশপাশের ইউনিয়নের প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষের। যুগের পর যুগ ধরে নড়বড়ে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলছে নদী পারাপার।
স্থানীয়রা জানান, নদীর এক পারে বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সিঙ্গারডাক গ্রাম এবং অন্য পারে মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রাম। বাসাইল থেকে মির্জাপুর যাওয়ার সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সংযোগস্থল এ গ্রাম দুটি। এ গ্রাম সংলগ্ন ফতেপুর ইউনয়নের ফতেপুর বাজারের পূর্ব পাশে পালপাড়া এলাকায় বংশাই নদীর উপরে একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী।
সেই দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে থলপাড়া, বানকাটা, পালপাড়া, সুতানরি, গোবিন্দপুর, বন্যাতলী, গোড়াকি, তেঘুরি, ভাতকুড়া, সোনারচর, পারদিঘী, কাঞ্চনপুর, হিলড়াসহ ২০-২৫ টি গ্রামের লোকজন এই নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যুগের পর যুগ ধরে নদী পার হচ্ছে। তাছাড়া মির্জাপুর, সখীপুর ও বাসাইল উপজেলার শতশত লোকজন এই বাঁশের সাঁকোর উপর নির্ভরশীল।
ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহীম মিয়া এবং ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ হোসেন বলেন, ফতেপুর বাজারের পুর্ব পাশে বংশাই নদীর উপর একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু নানা জটিলতায় সেটি আজও হয়নি। ব্রিজ না থাকায় চাষের ফসল বিক্রিতে অসুবিধায় পড়তে হয়। তাছাড়া স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে বেশি।
নদীর দুই পারে গ্রামগুলোতে প্রাইমারি এবং হাইস্কুলসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও প্রতিদিন পার হতে হয় নদীটি।
শুষ্ক মৌসুমে বংশাই নদীর পানি কমে গেলেও পুরোপুরি শুকায় না। তাই ওই মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে পারাপার হয় মানুষ। বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় সিএনজি, মোটরসাইকেল, ভ্যান, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন। যানবাহন নিয় নদী পারাপারের সময় দুর্ঘটনার খবরও পাওয়া যায় প্রায়ই।
বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম আল মামুন বলেন, আমি একাধিকবার বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তারা সমস্যা সমাধানে একটি সেতু করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইদানীং শুনছি সেতুর জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। যেন দ্রুত সবকিছু শেষ করে সেতুটি করা হয়, এই দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুল বলেন, ফতেপুর বাজারের পূর্বপাশে বংশাই নদীর উপর একটি পাকা ব্রিজসহ বেশ কয়েকটি ব্রিজ-কালভার্টের প্রকল্প তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।