ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিতে আর দেশের মানুষ ফিরতে চায় না। ধানের শীষ, পেটের বিষ, মানুষ এখন বলে সাপের বিষ। বিএনপির শক্তি কমে গেছে। কিন্তু মুখের বিষ কমেনি। তাদের নেতাদের বক্তব্য আরও উগ্র হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এতদিন দৌড়াতে দৌড়াতে এখন দাঁড়িয়ে গেছে। বিএনপি আন্দোলনে পথ হারিয়ে দিশেহারা। আন্দোলন করার শক্তি তাদের নেই। দৌড়াতে দৌড়াতে এখন মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে গেছে। কী দুরবস্থা। তাদের শক্তি কমে গেছে, কিন্তু মুখের বিষ কমেনি। আরও উগ্র হয়ে গেছে। প্রতিদিন বিএনপি নেতারা গালিগালাজ করে আশ্রাব্য ভাষায়। কোথায় যাবে এখন? ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে। একদিকে লন্ডনের ফরমায়েশ, অন্যদিকে টাকাওয়ালারা। ফখরুল এখন দিশেহারা। সরকারের পতন ঘটাবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ইলেকসড়শন করবে। ২৩ দফা, ১০ দফা, এক দফা দিয়ে সরকার পতন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে কী দেখলাম? লোকে বলে ময়মনসিংহ হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুর্ভেদ্য দুর্গ। এই ভরা রৌদে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে একজনর দেখার জন্য অগণিত মানুষ এখানে ছুটে এসেছেন। আজকে আবারও প্রমাণিত হলো এই ময়মনসিংহ বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার দুর্জয় ঘাঁটি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলে আজ দেশে এত উন্নয়ন। বিএনপির বড় জ্বালা। অন্তর জ্বালা। জ্বালায় পুড়ে দিনের আরাম, আর রাতের ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের জ্বালা। মানুষের চোখ জুড়ে যায় শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে। আর বিএনপির জ্বালা বাড়ে, বুকের জ্বালা, অন্তরে জ্বালা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা ঠিক আছেন? খেলা তাহলে হবে। খেলা হবে, জোরদার খেলা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জোরদার খেলা হবে। তবে আন্দোলন দেখে মনে হয় তেমন খেলতে হবে না। ময়মনসিংহ প্রস্তুত, শুধু অপেক্ষা শেখ হাসিনার ডাকের।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই বিএনপির হাতে আমরা বাংলাদেশ ফিরিয়ে দেবো না। আমাদের প্রাণ থাকতে, এই দেশের মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে থাকতে আমরা কখনও এই দেশ বিএনপির অপশক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেবো না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এদেশের গণতন্ত্র মেরামত করেছেন শেখ হাসিনা। তার জন্য গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আপনার ধ্বংস করেছেন। আপনারা ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিলেন। তারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। জেলহত্যার খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের প্রাণ থাকতে এই বিএনপির হাতে বাংলাদেশ ফিরিয়ে দেব না।
ময়মনসিংহে ১০৩টি প্রকল্প উদ্বোধনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ৭৩টি প্রকল্প উদ্বোধন, ৩৩টি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। এত প্রকল্প ময়মনসিংহের মানুষ দেখেছে কখনো! এরপর আর কোথায় যাবেন। নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলে আজ এত উন্নয়ন। ময়মনসিংহের ঘরে ঘরে আগে ছিল অন্ধকার। এখন ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলো। হাতে হাতে মোবাইল। ঘরে ঘরে ইন্টারনেট। ইউনিয়নে ডিজিটাল কেন্দ্র। এই সেবা অতীতে কেউ পেয়েছে?
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ হোসেন, মির্জা আজম, সদস্য মারুফা আখতার পপি, সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল, জেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু, সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের সভাপিতত্বে বিভাগীয় জনসভায় ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।