লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অল্প সময়ের জন্য ক্ষমতায় আছে। দেশ পরিচালনা করতে গিয়ে বর্তমানে অন্তবর্তীকালীন সরকার ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি কীভাবে ঘটানো যায়, এর জন্য একটি চক্রান্ত, একটি গোষ্ঠী লেগে আছে। এরা তারাই যারা বিগত দিনে অত্যাচার-নির্যাতন, খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, ডাকাতি-সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল। সেই চক্রই বিভিন্নভাবে আগেও যেমন হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করেছিল, এখনো সুযোগ বুঝে আঘাত করে আসছে। ওই আঘাত করে এ সরকারের বিরুদ্ধে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ আনার চেষ্টা করছে। সকল ধর্মের মানুষ ও রাজনৈতিক দল সবাই মিলে আমরা একসঙ্গে মিলেমিশে আছি এবং থাকব।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে জুয়েলার্স ব্যবসায়ী হিরা লাল দেবনাথের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) জেলা শাখার ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ্যানি বলেন, অতীতে কারা হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল করেছে। সেটি বুঝতে কারো বাকি নেই। তারা কিন্তু সবাই পালিয়ে যায়নি, দেশে আছে। ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে আঘাত করছে। আর পাশের দেশকে বুঝাতে চায় যে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব হল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আরও বেশি সজাগ থাকা। কারণ দেশটা আমাদের সবার। দেশটাকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। জাতিকে রক্ষা করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের সবাইকে একত্রিত করেছেন এবং চেষ্টা করেছেন। সব রাজনৈতিক দলসহ আমরা সবাই মিলে ছাত্র-জনতার আন্দোলন তৈরি করেছি। এ আন্দোলনের ধারাবাহিকতা আমাদেরকে রক্ষা করতো হবে। আন্দোলনের সুফল-ফসল আমাদেরকে ঘরে নিয়ে আসতে হবে।
হিরা লাল দেবনাথের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, হিরা লাল দেবনাথকে হত্যার ঘটনায় ডিসি ও এসপির সঙ্গে কথা বলেছি। আবারও বলব। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতেই হবে। রহস্য উদ্ঘাটন করতে হবে। তারা কারা, সমাজে তাদেরকে চিহ্নিত করে দিতে হবে। তারা কারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে, তাদের মুখোশ জাতির কাছে উন্মোচন করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ফারুক হোসাইন নুর নবী, বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিলন মণ্ডল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক শিমুল সাহা, বাজুস জেলা সভাপতি সমীর কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক পরেশ কর্মকার ও নিহত হিরার ছেলে প্রিতম দেবনাথ প্রমুখ।
হিরা লাল দেবনাথ সদর উপজেলার কাজীর দিঘির পাড় বাজারের মাতৃ শিল্পালয়ের মালিক। শুক্রবার রাতে তিনি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাইসাইকেলযোগে বাড়ি যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তরা গতিরোধ করে ছুরিকাঘাতে তাকে হত্যা করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।