নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই শুধু নয়, পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল আওয়ামী লীগ। এই ধ্বংস থেকে দেশকে মেরামত না করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে এক হোটেলে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজকে অনেকেই সংস্কারের কথা বলছে, কিন্তু সবার আগে সংস্কারের কথা বলেছে বিএনপি। রাজনীতির পট পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা রয়েছে। সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি জনগণের সব ইস্যুতে কথা বলা উচিত।
দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একটি পরিবর্তনের জন্য জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোকে সমর্থন দিয়েছে বলেই স্বৈরাচার মাফিয়া বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছে। এখন জনগণের ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলা উচিত আমাদের, এটাই রাজনীতি। আসুন, জনগণের আশা, আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করি।
তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী সকল শক্তি মিলে দুই বছর আগে আমরা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা দিয়েছি। দেশে প্রথম ধ্বংস করেছে ভোটের ব্যবস্থা। দেশের সকল সেক্টরকে মেরামত করতে হবে। দেশের কাঠামো মেরামতের কথা সবার আগে আমরাই বলেছিলাম।
তারেক রহমান বলেন, জনগণ রাজপথে নেমে আসায় একজন মাফিয়া স্বৈরাচারকে দেশ থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব হয়েছে। আমরা কে কোথায় কতদিন দায়িত্ব পালন করবো, তা নিয়ে আলোচনা করছি।
সংস্কার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, আমরা দেশের রাজনৈতিক অধিকার, ভোটের অধিকার সবকিছুকে সামনে রেখে একসঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করেছি। আজকে অনেকেই সংস্কারের কথা বলছে, কিন্তু সবার আগে সংস্কারের কথা বলেছে বিএনপি। রাজনীতির পট পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা রয়েছে। সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি জনগণের সব ইস্যুতে কথা বলা উচিত। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কীভাবে উন্নত করা যায় তা নিয়ে কথা বলা, অ্যাম্বুলেন্স কীভাবে ১০ মিনিটে বাসায় পৌঁছাবে তা নিয়ে কথা বলা- এরকম জনগণের আরও অনেক প্রত্যাশা রয়েছে, সেসব বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচার যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেরামত করতে হবে। আমাদের রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং জনগণকে ঘিরে। আমাদের রাজনীতির সবচেয়ে বড় পুঁজি হচ্ছে এদেশের জনগণ। তাই রাষ্ট্রের এই বিষয়গুলো যদি মেরামত না করি, এদেশ আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারব না। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব না।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জনগণের সমর্থন ছিল বলেই শেখ হাসিনার মতো একজন মাফিয়াকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করা সম্ভব হয়েছে। ওই আন্দোলনে জনগণ রাজপথে বেরিয়ে এসে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে। দল-মত-নির্বিশেষে সবাই সমর্থন দিয়েছে। একটি পরিবর্তন হতে হবে সেই প্রত্যাশায় তারা নিজেদের উৎসর্গ করেছে। নিশ্চয় জনগণের সেখানে একটি প্রত্যাশা আছে। কেনো তারা এই পরিবর্তন চেয়েছে? তারা অনেক কিছু প্রত্যাশা করে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই বাংলাদেশটি স্বাধীন হয়েছিল লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। স্বাধীনতার পরে বিভিন্ন সময়ে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করেছেন অনেকেই।’
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।