Dhaka শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশকে এখন পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ : নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারের উৎপাদন করার চেয়ে আমদানি করার চাহিদা বেশি। কমে গেছে রপ্তানি আয়ও। দেশে প্রবাসী আয় কমেছে। দেশকে এখন পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। কোনো দিক থেকে আমরা ভালো কিছু দেখছি না। দেশে ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না।

বুধবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মতিনের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক লেবার পার্টির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, সরকার এখন ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমাদের রপ্তানির আয় এখন হুমকির মুখে। বছরে দুই তিনবার করে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। এতে মানুষের প্রকৃত মজুরি কমে যাছে। এসব লুটপাটের মাশুল জনগণকে দিতে হচ্ছে। মানুষ খুবই কষ্টের মধ্যে আছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে লোডশেডিং হচ্ছে; আর অন্যদিকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সারা দুনিয়ায় তেলের দাম কমে গেলেও আমাদের দেশে তেলের দাম বেড়ে গেছে। দেশে বেকার সংখ্যা বেড়ে গেছে। জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের গবেষকরা বলছে প্রতিবছর দেশে গরিবের সংখ্যা বাড়ছে। শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার মানে হলো প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়া। এই সরকার কোনো কিছুর পরোয়া করে না।

বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, এদেশের সাধারণ মানুষ বড় কষ্টে আছে। আমাদের ১৬টা চিনিকল ছিল। এখন বর্তমানে মাত্র ৭টা আছে; কিন্তু সেগুলোও তেমন ভালো নয়। আমরা আজকে নির্ভরশীল হয়ে গেছি। আজকে উৎপাদন করে চাহিদা মেটানোর চেয়ে আমদানি করে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদেশটাকে একেবারে পরনির্ভরশীল করে ফেলা হয়েছে। যে দেশ পরনির্ভরশীল হয় ওই দেশকে কোনো মতে ভালো দেশ হিসেবে গণ্য করা যায় না। দেশকে বাঁচাতে হবে। যারা দেশকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

আব্দুল মতিনের স্মৃতিচারণ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা মহানগর যখন একটা ছিল তখন অবিভক্ত শ্রমিক লীগের প্রেসিডেন্ট ছিল আব্দুল মতিন। তিনি জাগো ফ্রন্টেরও নেতা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ পরিত্যাগ করে জাসদ করলেন। আবার জাসদ পরিত্যাগ করে লেবার পার্টিতে ঢুকলেন। এরপর জিয়াউর রহমানে সঙ্গেও যোগ দিলেন। ক্ষমতার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ ছিল না। তার আগ্রহে ছিল শ্রমজীবী মানুষ। এদের জন্য তার আবেগ ও দায়বোধ ছিল। সে জন্যই লেবার পার্টি করেছিলেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে যদি ছাত্র আন্দোলন থাকতো তাহলে হয়তো এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারতো না। এ সরকার খুব একটা সুখে নেই। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচন আরও খারাপ হয়েছে। দেশে রিজার্ভ কমে গেছে। তিন মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভ একেবারে জিরো হয়ে যাবে। বাংলাদেশের সরকার ক্ষমতা নিয়ে একটু বেশি দুশ্চিন্তায় আছে। আমাদের একটা কার্যকর ঐক্য তৈরি করে আন্দোলনে নামতে হবে। একটু বড় ধরনের ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে সরকার।

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত

দেশকে এখন পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ : নজরুল ইসলাম খান

প্রকাশের সময় : ০৫:০২:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান বলেন, সরকারের উৎপাদন করার চেয়ে আমদানি করার চাহিদা বেশি। কমে গেছে রপ্তানি আয়ও। দেশে প্রবাসী আয় কমেছে। দেশকে এখন পুরোপুরিভাবে পরনির্ভরশীল করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। কোনো দিক থেকে আমরা ভালো কিছু দেখছি না। দেশে ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না।

বুধবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মতিনের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক লেবার পার্টির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, সরকার এখন ঋণ করে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। আমাদের রপ্তানির আয় এখন হুমকির মুখে। বছরে দুই তিনবার করে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। এতে মানুষের প্রকৃত মজুরি কমে যাছে। এসব লুটপাটের মাশুল জনগণকে দিতে হচ্ছে। মানুষ খুবই কষ্টের মধ্যে আছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে লোডশেডিং হচ্ছে; আর অন্যদিকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সারা দুনিয়ায় তেলের দাম কমে গেলেও আমাদের দেশে তেলের দাম বেড়ে গেছে। দেশে বেকার সংখ্যা বেড়ে গেছে। জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের গবেষকরা বলছে প্রতিবছর দেশে গরিবের সংখ্যা বাড়ছে। শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার মানে হলো প্রকৃত মজুরি কমে যাওয়া। এই সরকার কোনো কিছুর পরোয়া করে না।

বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, এদেশের সাধারণ মানুষ বড় কষ্টে আছে। আমাদের ১৬টা চিনিকল ছিল। এখন বর্তমানে মাত্র ৭টা আছে; কিন্তু সেগুলোও তেমন ভালো নয়। আমরা আজকে নির্ভরশীল হয়ে গেছি। আজকে উৎপাদন করে চাহিদা মেটানোর চেয়ে আমদানি করে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এদেশটাকে একেবারে পরনির্ভরশীল করে ফেলা হয়েছে। যে দেশ পরনির্ভরশীল হয় ওই দেশকে কোনো মতে ভালো দেশ হিসেবে গণ্য করা যায় না। দেশকে বাঁচাতে হবে। যারা দেশকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।

আব্দুল মতিনের স্মৃতিচারণ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা মহানগর যখন একটা ছিল তখন অবিভক্ত শ্রমিক লীগের প্রেসিডেন্ট ছিল আব্দুল মতিন। তিনি জাগো ফ্রন্টেরও নেতা ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ পরিত্যাগ করে জাসদ করলেন। আবার জাসদ পরিত্যাগ করে লেবার পার্টিতে ঢুকলেন। এরপর জিয়াউর রহমানে সঙ্গেও যোগ দিলেন। ক্ষমতার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ ছিল না। তার আগ্রহে ছিল শ্রমজীবী মানুষ। এদের জন্য তার আবেগ ও দায়বোধ ছিল। সে জন্যই লেবার পার্টি করেছিলেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে যদি ছাত্র আন্দোলন থাকতো তাহলে হয়তো এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারতো না। এ সরকার খুব একটা সুখে নেই। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচন আরও খারাপ হয়েছে। দেশে রিজার্ভ কমে গেছে। তিন মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভ একেবারে জিরো হয়ে যাবে। বাংলাদেশের সরকার ক্ষমতা নিয়ে একটু বেশি দুশ্চিন্তায় আছে। আমাদের একটা কার্যকর ঐক্য তৈরি করে আন্দোলনে নামতে হবে। একটু বড় ধরনের ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে সরকার।

বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।