জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ভয়াবহ বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসি মানুষ। গত দুদিনে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও মানুষ রয়েছে সীমাহীন দুর্ভোগে। যত দিন যাচ্ছে খাদ্য আর বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে এবং উচু বাঁধে এবং সড়কে আশ্রয় নিয়েছে তাদের বিরম্বনার যেন কোনো শেষ নেই।
শুক্রবার দুপুরে দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে আশ্রয় নেওয়া বানভাসিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় গত ১৪ জুলাই প্রথম বন্যার পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা নিজেদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে এই স্টেশনের প্লাটফর্মে পরিবার-পরিজন গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
এখানে তাদের জন্য দুঃখের কোনো শেষ নেই স্টেশনের প্লাটফর্মের মেঝের ওপর ছোট বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে শুয়ে আছেন মায়েরা। সরকারি ত্রাণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, তারা ত্রাণ পেয়েছেন কিন্তু এভাবে থাকতে কষ্ট হচ্ছে তাদের। তারা বলেন, সরকার আর কত দিবে আমরা কোনো কাজ করতে পারছি না এভাবে বসে বসে আর কতদিন খাব।
দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশনের মালবাহী বগিতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকগুলো পরিবার। সেখানেই চলছে রীতিমত তাদের সংসার। রেলের বগির নিচে পানি সামনে পানি সর্বত্রই পানির ভেতরে যেন জেলখানার মতো কোনো রকম মাথা গুঁজে জীবন পার করছেন তারা।
স্টেশনের একটু দূরেই দেখা গেল একটা তাবুর নিচে এক গৃহিণী তার ছোট বাচ্চা আর গৃহপালিত গরু নিয়ে মাথা গুজার ঠাঁই করে নিয়েছেন। তার কাছে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তিনি রাগে-ক্ষোভে উত্তেজিত হয়ে বলেন কথা বলে কি হবে? আমাদের দেখার কেউ নেই এত কষ্টে কেউ থাকে?
দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার আব্দুল বাতেন জানান, বন্যায় বিপাকে পড়ে তারা এই প্লাটফর্মে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে আশেপাশের জায়গায় ঠাঁই নিয়েছেন। আমরা জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই তাদেরকে এখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছি বন্যার পানি নেমে গেলেই তারা এখান থেকে চলে যাবেন।
এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান জানিয়েছেন প্রতিদিন আমরা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে ত্রাণ বিতরণ করে আসছি এবং দুর্গত অঞ্চলগুলোতেও ইউএন ও মহোদয়ের নেতৃত্বে আমরা ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।