নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যদি কেউ কোনো নাশকতা ঘটাতে চায় তা মোকাবিলার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে প্রস্তাবনায় সই করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তাদের নিষিদ্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদি, কেউ কোনো নাশকতা ঘটাতে চায়, তা মোকাবিলার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে জামায়াত প্রথমে ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ নামে মোর্চা করে এবং ১৯৭৯ সালের ২৭ মে নিজ নামে আত্মপ্রকাশ করে।
তখন থেকেই জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবি উঠতে থাকে। মানবতাবিরোধী অপরাধের একাধিক রায়ে জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল সংগঠন’ আখ্যা দেওয়ার পর দল হিসেবেও তার বিচারের দাবি উঠে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন না করায় সেই পথে হাঁটা যায়নি।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আন্দোলনে গত ২৮ থেকে ২১ জুলাই নজিরবিহীন সহিংসতা এবং সরকারি হিসাবে দেড়শ মানুষের প্রাণহানি, অজস্র রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলার জন্য এর পেছনে জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে জামায়াত নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
অগাস্টের প্রথম দিন ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ চালানোর অভিযোগে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে তার ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরও।
জামায়াত এবং এর সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারার ক্ষমতাবলে
প্রজ্ঞাপন জারির আগে, সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের এক ব্রিফিংয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির এবং তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের যেসব কর্মী ১৯৭১ সালের পর জন্ম নিয়েছেন তাদের গণহারে বিচার করা হবে না।
এ সময় মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধের পর একজনকে আদালত ছাড়া অপরাধী হিসেবে শাস্তি দিতে পারে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে আইনের কথা বলছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, সেখানেও আমরা সংশোধনের ব্যবস্থা করেছি। এই নিষিদ্ধ করার পরেও তাকে সাজা দেওয়া যাবে না এমনটি না। তবে নিষিদ্ধ যেহেতু হয়ে গেছে, সেহেতু নিষিদ্ধ করার বিষয়টি সাজার মধ্যে আসবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়ার পর তাদের সদস্যরা এই দলের অধীনে রাজনীতি করতে পারবে না। তারা যদি বাংলাদেশের কোনো আইনে অপরাধ করে থাকে, অবশ্যই তাদের বিচার হবে। কিন্তু এটা যদি বলেন, গণহারে জামায়াতের যারা নতুন কর্মী যারা ১৯৭১ সালের পর জন্ম নিয়েছে, তাদের বিচার করা হবে না।
জামায়াত আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে পারে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতে পারে। আন্ডারগ্রাউন্ডে অনেক দল গেছে। অনেক দল যেতে পারে আন্ডারগ্রাউন্ডে। কিন্তু আমি বলেছি, সেটিকে মোকাবিলার প্রস্তুতি আমাদের আছে।