ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি :
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল থাকতেই পারে। যারা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে চায় তারা করতে পারে। কিন্তু যারা সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে সেগুলোকে বন্ধ করার কথা উঠেছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল থাকতেই পারে। যারা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে চায় তারা করতে পারে। কিন্তু যারা সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে সেগুলোকে বন্ধ করার কথা উঠেছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ছিলো দেশদ্রোহীতামূলক এবং তারা এই ভূমিকা থেকে কখনো সরে আসেনি। এখনো তাদের ভূমিকা দেশদ্রোহীতামূলক।
তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী একমাত্র দল যেদল থেকে সবচেয়ে বেশী যুদ্ধাপরাধীদের সাজা হয়েছে। তাই জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টা যথার্থ।
কোটা সংস্কার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমি ধরেই নিলাম আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি ভুল কথা বলেছেন, এটার ওপরে আমি কি নিজেকে রাজাকার দাবি করতে পারি? রাজাকার একটি ঘৃণিত শব্দ এবং একটি ঘৃণিত সম্প্রদায়কে বোঝানোর জন্য ব্যবহার হয়। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে রাজাকার বলেও থাকেন, আমি উল্টো প্রধানমন্ত্রীকে বলব না, প্রধানমন্ত্রী আমি রাজাকার নই। সেখানে আমি কীভাবে বলবো আমি রাজাকার, আমি রাজাকার।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি যদি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাহলে আমি নিজেকে কখনোই রাজাকার হিসেবে পরিচয় দিতে পারি না। আমি যদি আইনের শাসনে বিশ্বাসী হই, তাহলে সকল মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলতে পারি না। আইনের শাসনে যদি বিশ্বাসী হই, তাহলে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক সেটা আমি বলব। মুষ্টিমেয় কিছু নয়, সকল হত্যার বিচার দাবি করব। হত্যাকারী যারাই হোক তাদের সকলের আমি বিচার দাবি করব। হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে হলে মামলা করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আজকে যদি ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে মার্চ ফর জাস্টিস হয়, আমি বলব ঠিক আছে তারা করুক। কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, আপনি যখন মার্চ ফর জাস্টিস করবেন, তখন অবশ্যই আপনি দাবি করবেন সকল হত্যাকাণ্ডের যেন বিচার হয়।
তিনি বলেন, যারা ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে, তারা করুক। কিন্তু সাম্প্রদায়িক দল যারা সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে, সেগুলোকে বন্ধ করার কথা উঠেছে। জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার যে প্রচেষ্টা এটাকে আমি স্বাগত জানাই।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে মৎস্য সপ্তাহের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবীর, সিভিল সার্জন মো. বেলায়েত হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভনসহ প্রশাসেনর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে মন্ত্রী সফল মৎস্যচাষিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।