Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচন হতো এবং সরকার অপরিবর্তিত থাকতো : জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না আসলে দেশে নির্বাচন হতো না বিএনপির এই অভিযোগ ভুল। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচন হতো এবং সরকার অপরিবর্তিত থাকতো।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে রমনা ইঞ্জিনিয়ার ইস্টিটিউশন মিলানায়তনে দলের বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা না গেলেও নির্বাচন হতো। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার জন্য আওয়ামী লীগ লালায়িত ছিল না। তারা আমাদের অনুগত বিরোধী দল বানাতে চেয়েছে। তারা আমাদের গলায় কিছু পচা আবর্জনা ঢুকিয়ে অনুগত বিরোধী দল বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি গৃহপালিত বিরোধীদল হতে রাজি না। এটা বুঝেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে দাবি করেন জিএম কাদের। কিন্তু এ নিয়ে একটা পক্ষ জাতীয় পার্টির মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে।

জিএম কাদের বলেন, সরকার জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল বানাতে চেয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দেয়নি তার দল।

বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, নির্বাচনে ২৬টি আসনে ছাড় দেয়ার বিষয়টি জনগণের মধ্যে যেমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে, নেতাকর্মীদের মাঝেও করেছে। আমাদের হাতে ২৬টি আসনের তালিকা ধরিয়ে দেয়া হয়। এ তালিকা দিয়ে বোঝানো হলো জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। নির্বাচনে যাব না বলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ দেয়া হয়। সবাই ভাবে ২০০ কোটি টাকা দিয়ে কাদের দল বিক্রি করে দিয়েছে। তারপর শুধু টাকা দেন টাকা দেন করেছে। মনোনয়ন নিয়ে কোনো বাণিজ্য হয়নি, কোনো মনোনয়ন আমি নিজের ইচ্ছায় দিইনি।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নেতারা আছেন জাতীয় পার্টি আছে, নেতারা থাকলেই জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে। নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে না থাকলেও আমার ওপর দায়িত্ব দেয়ায় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। আমাকে নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।

নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দল বাঁচাতেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। আওয়ামী লীগ এখন স্বৈরাতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আমার পরিষ্কার ধারণা ছিল, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। বাংলাদেশে কখনও আন্দোলনের মুখে কোনও সরকার পদত্যাগ করে নাই।

জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে এমন ইতিহাস নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু সরকার পরিবর্তন সম্ভব।

জাতীয় পার্টির সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে আমি বিভিন্ন বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয় আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি এই আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচন জীবনমরণের সংগ্রাম মনে হয়েছে। তিনটি শক্তি নির্বাচনকে সফল করার জন্য চেষ্টা করেছে। অনেকের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত ছিল।

রাজনীতি থেকে এরশাদ এবং তার পরিবারকে নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘সবাই বলে আমি আমার স্ত্রীর জন্য দল বেচে দিয়েছি, এটা সঠিক নয়। উত্তরার আসনটা নিতে চেয়েছিলাম দলের ভালোর জন্য। আমাকে ধ্বংস করা মানে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করা, সেটি করার চেষ্টা করা হয়েছে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, সালমা ইসলামসহ অনেকে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মহিপুরে পাঁচ কিমি কাঁচা সড়কে হাঁটুজল, দুর্ভোগে পথচারী

জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচন হতো এবং সরকার অপরিবর্তিত থাকতো : জিএম কাদের

প্রকাশের সময় : ০২:১০:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না আসলে দেশে নির্বাচন হতো না বিএনপির এই অভিযোগ ভুল। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে না গেলেও নির্বাচন হতো এবং সরকার অপরিবর্তিত থাকতো।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে রমনা ইঞ্জিনিয়ার ইস্টিটিউশন মিলানায়তনে দলের বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা না গেলেও নির্বাচন হতো। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার জন্য আওয়ামী লীগ লালায়িত ছিল না। তারা আমাদের অনুগত বিরোধী দল বানাতে চেয়েছে। তারা আমাদের গলায় কিছু পচা আবর্জনা ঢুকিয়ে অনুগত বিরোধী দল বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি গৃহপালিত বিরোধীদল হতে রাজি না। এটা বুঝেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলে দাবি করেন জিএম কাদের। কিন্তু এ নিয়ে একটা পক্ষ জাতীয় পার্টির মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে।

জিএম কাদের বলেন, সরকার জাতীয় পার্টিকে গৃহপালিত দল বানাতে চেয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ফাঁদে পা দেয়নি তার দল।

বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, নির্বাচনে ২৬টি আসনে ছাড় দেয়ার বিষয়টি জনগণের মধ্যে যেমন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে, নেতাকর্মীদের মাঝেও করেছে। আমাদের হাতে ২৬টি আসনের তালিকা ধরিয়ে দেয়া হয়। এ তালিকা দিয়ে বোঝানো হলো জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। নির্বাচনে যাব না বলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চাপ দেয়া হয়। সবাই ভাবে ২০০ কোটি টাকা দিয়ে কাদের দল বিক্রি করে দিয়েছে। তারপর শুধু টাকা দেন টাকা দেন করেছে। মনোনয়ন নিয়ে কোনো বাণিজ্য হয়নি, কোনো মনোনয়ন আমি নিজের ইচ্ছায় দিইনি।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নেতারা আছেন জাতীয় পার্টি আছে, নেতারা থাকলেই জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে। নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে না থাকলেও আমার ওপর দায়িত্ব দেয়ায় আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। আমাকে নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে।

নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, দল বাঁচাতেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। আওয়ামী লীগ এখন স্বৈরাতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, আমার পরিষ্কার ধারণা ছিল, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। বাংলাদেশে কখনও আন্দোলনের মুখে কোনও সরকার পদত্যাগ করে নাই।

জিএম কাদের বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে এমন ইতিহাস নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু সরকার পরিবর্তন সম্ভব।

জাতীয় পার্টির সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে আমি বিভিন্ন বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গে বৈঠকে করে পরিষ্কার বুঝেছি, তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচন সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তারা নয় আরও বেশ কয়েকটি বিদেশি শক্তি এই আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।

জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচন জীবনমরণের সংগ্রাম মনে হয়েছে। তিনটি শক্তি নির্বাচনকে সফল করার জন্য চেষ্টা করেছে। অনেকের নিজস্ব স্বার্থ জড়িত ছিল।

রাজনীতি থেকে এরশাদ এবং তার পরিবারকে নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘সবাই বলে আমি আমার স্ত্রীর জন্য দল বেচে দিয়েছি, এটা সঠিক নয়। উত্তরার আসনটা নিতে চেয়েছিলাম দলের ভালোর জন্য। আমাকে ধ্বংস করা মানে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করা, সেটি করার চেষ্টা করা হয়েছে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার, সালমা ইসলামসহ অনেকে।