নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সংস্কার অর্থবহ হবে না আর তা হতে হবে সংসদীয় ব্যবস্থায়, সে জন্য নির্বাচন দরকার।
শনিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে হাইকোর্ট অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এখন যারা রাষ্ট্রের দায়িত্বে আছেন, তাদের আমরাই সমর্থন দিয়েছি, সকলে একসাথে, ছাত্ররা, রাজনীতিবিদরা আমরা সবাই। এই প্রত্যাশায় দিয়েছি, ১৫ বছর আওয়ামী লীগ যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে তারা সেগুলো সরিয়ে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই তরুণ-যুবকের যে চাওয়া নতুন বাংলাদেশ, সে বাংলাদেশ যেন আমরা তৈরি করতে পারি।
‘অনেকে জিজ্ঞাসা করেন ‘আপনারা এত নির্বাচন-নির্বাচন করেন কেন’ মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘আমি বরাবরই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মানুষ। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সংস্কার বা উদ্যোগ কখনো সম্ভব হতে পারে না। নির্বাচিত প্রতিনিধি জনগণের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে সম্ভব। সমস্যা ওই জায়গায়, দেশে গণতন্ত্র চর্চা না হওয়ায় যে সংস্কৃতি, সেটি গড়ে উঠেছে। প্রত্যেকের মধ্যে একটা স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী চিন্তা-ভাবনা একবারে বাসা বেঁধে আছে। আমরা দ্রুত অসহনশীল হয়ে যাই। গণতন্ত্র মানেই সহনশীলতা।’
তরুণদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিন মাসের মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার অনেক কাজ করেছে। এই সরকারকে সময় দিতে হবে। সংস্কারের জন্য অনেক কমিশন করেছে, ফ্যাসিবাদের বিচারের উদ্যেগ নিয়েছে। এই সুযোগ আমাদের হাতছাড়া করা যাবে না। এই সুযোগ হাতছাড়া করলে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক কথার কারণে ফ্যাসিবাদীরা ষড়যন্ত্র করার সুযোগ পাচ্ছে, কোনো কোনো মিডিয়া সেটিকে আবার প্রোমোট করছে, এটা বন্ধ করতে হবে। বয়স্কদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুবকদের শক্তি, সাহসকে এক করে দেশের কাজে লাগাতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে সময় দিতে হবে। তাদের আমরা দায়িত্ব দিয়েছি। মিডিয়ার মধ্যে অনেকেই কোনো সাফল্য দেখতে পান না। সব কিছু এক সঙ্গে সম্ভব নয়। তরুণদের অনুরোধ করবো, আপনারা ধৈর্য ধরুন।
কিছু মিডিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ কিছু কিছু জায়গায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। দুর্ভাগ্য, কিছু মিডিয়া তাদের প্রমোট করছে। এটি জনগণের জন্য শুভময়ী মঙ্গল বয়ে আনবে না। এ ধরনের প্রচারণা চালানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।
তরুণ-যুবকরাই দেশের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘বয়স্কদের অভিজ্ঞতার সাথে যুবকদের শক্তি, সাহসকে এক করে দেশের কাজে লাগাতে হবে।’
আমাদের ধৈর্য ধরে সংস্কার ও নির্বাচনের যে কাজ আছে তা যেনো সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারি সেজন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলেও যোগ করেন তিনি।
মাও সেতুং এর উক্তির কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যুবকদের ঘাড়ের মধ্যে বৃদ্ধদের মাথাটাকে বসিয়ে দাও। অর্থাৎ যারা বয়স্ক তাদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানটাকে নাও, যুবকদের শক্তি দিয়ে নতুন কিছু গড়ে তুলো।