বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে কর্মকর্তাদের অনিয়মের সিন্ডিকেট ভাঙার আহ্বান জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, বছরে অর্ধসহস্রাধিক বাস এবং অর্ধসহস্রাধিক ট্রাক যোগ করার পরও কেন লোকসান থাকে? প্রধানমন্ত্রী বিআরটিসিকে সমৃদ্ধ করেছেন। আপনারা অনিয়মের সিন্ডিকেট বন্ধ করে দিন। আর লঘু অপরাধে শ্রমিকদের গুরু দণ্ড দেবেন না। অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে শাস্তি দিন। নিম্ন বেতনভুক্তদের শাস্তি দিয়ে বড় অপরাধ আড়ালের কৌশল নেবেন না।
শনিবার বিআরটিসির প্রধান কার্যালয়ে ঈদ সার্ভিস উপলক্ষে গৃহীত পদক্ষেপ ও দিকনির্দেশনামূলক সভায় সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন রাষ্ট্রের পতাকাবাহী একটি গণপরিবহন সংস্থা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিআরটিসি যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সেবায় নিয়োজিত। গাড়ির চাকা সচল থাকলে সংস্থাটির আয় হয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগের পুঞ্জীভূত লোকসান বা দায়দেনা কমিয়ে আনার ধারায় ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের সময় গাড়ি বন্ধ থাকায় আয়ের ক্ষেত্রে আবারো ছন্দপতন ঘটে।
তিনি বলেন, আমি বারবার বলি, বিআরটিসিকে অনিয়মের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। লাভের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে। আর একাজ অন্য কেউ করে দেবে না। এটি বিআরটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম নিয়ে করতে হবে।
স্থাটির প্রতি গণমানুষের যে আস্থা তা ধরে রাখতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বলে বছরের পর বছর সরকার টাকা দেবে তা নয়। নিজেদের আর্থিক মেরুদণ্ড শক্ত করতে হবে। বাড়াতে হবে সক্ষমতা। লোকসান কমানোর যে ধারায় বিআরটিসি ফিরে এসেছে তা ধরে রাখতে হবে।
বিআরটিসির বেশির ভাগ অনিয়ম কর্মকর্তারাই করে জানিয়ে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, বিআরটিসির সমস্যা শ্রমিক-কর্মচারী নন, ডিপো কেন্দ্রিক। যে অনিয়ম তা শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সদর দপ্তরেও কিছু সমস্যা আছে, সেটা আমার জানা আছে। বিআরটিসির পরিবহন মেরামত, ক্রয়, ভূমি ইজারা প্রদান, ইজারা আদায়, দৈনিক ট্রিপ ব্যবস্থাপনা, পণ্যসেবা থেকে আদায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বাস ভাড়া প্রদান, বাস লিজ প্রদানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের ভূতের আছর আছে বলে আমার কাছে অভিযোগ আছে।
আপনারা ভাববেন না যে, আমি কোনো খবর রাখি না। অনিয়মের ব্যাপারে শেখ হাসিনা সরকারের যে অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি তা আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সতর্ক করে দিতে চাই, কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়।
চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলেও বিআরটিসির পরিবর্তন হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আসে যায়, পরিবর্তন হয় সরকারের নিয়মে। কিন্তু বিআরটিসির জনবল ব্যবস্থাপনা, সেবার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সমন্বয় করে জনবল বাড়ানো তথা অর্গানোগ্রাম হালনাগাদকরণের কোনো উদ্যোগ দেখতে পাই না। সবাই রুটিন দায়িত্ব পালন করে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা নিতে দেখি না।