আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চীন এবং হংকং থেকে আসা আন্তর্জাতিক পার্সেল গ্রহণ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পোস্টাল সার্ভিস (ইউএসপিসি)। তবে এর কোনও কারণ জানায়নি তারা।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নতুন করে বাড়তে থাকা বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যে এই পদক্ষেপ নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বেইজিং এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগের সিদ্ধান্ত ‘অযৌক্তিক দমনপীড়ন’ বলে অভিযোগ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পোস্টাল সার্ভিস চীন ও হংকংয়ের পার্সেল বন্ধ রাখলেও চিঠি আসা বন্ধ রাখবে না বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
সিএনএন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ‘ডি মিনিমিস’ কর ছাড়ের একটি নিয়ম বাতিল করার পর পোস্টাল সার্ভিস এই পদক্ষেপ নিল। ওই নিয়মে ৮০০ ডলারের কম মূল্যের প্যাকেজের চালান যুক্তরাষ্ট্রে কোনও শুল্ক ছাড়াই ঢুকতে পারত বা প্যাকেজগুলো খতিয়ে দেখে ঢুকতে দেওয়া হত।
ট্রাম্প ডি মিনিমিস নিয়ম বাতিল করা ছাড়াও মঙ্গলবার থেকে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্কও কার্যকর করেছেন। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে ট্রাম্পের একের পর এক এসব পদক্ষেপের পরই ডাকবিভাগ পার্সেল বন্ধের ঘোষণা দিল।
এই সিদ্ধান্তের ফলে চীনের ই-কমার্স কোম্পানিগুলোর ব্যবসা হুমকিতে পড়বে। ২০২৩ সালের মার্কিন সরকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ শতাংশ পার্সেল আসে চীনের শেইন ও তেমু ই-কমার্স কোম্পানি থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগের নতুন পদক্ষেপের ফলে এ দুটি কোম্পানির ব্যবসাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডি মিনিমিস কর ছাড়ের আওতায় কোম্পানি দুটি তাদের ব্যবসায়িক মডেলের ভাল বাজার গড়ে তুলতে পেরেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। সস্তা পণ্যে কর ছাড়ের সুবিধার কারণে এই চীনা কোম্পানিগুলোর ১ শ কোটিরও বেশি প্যাকেজ কম দামে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মর্নিংস্টার ফার্মের ইক্যুয়িটি বিশ্লেষক চেলসি টম এক গবেষণাপত্রে বলেন, চীনা প্যাকেজগুলো আবার যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়ার ক্ষেত্রে সেগুলোর ওপর নতুন নিয়মে কীভাবে কর চালু করা হবে তা ঠিক করতে পোস্টাল সার্ভিসের (ইউএসপিএস) সময় প্রয়োজন।
তার মতে, কাজটি চ্যালেঞ্জিং। কারণ, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন ৪০ লাখ ডি মিনিমিস প্যাকেজ ঢুকেছে। সব প্যাকেজ খতিয়ে দেখা কঠিন। সেকারণেই আরও সময় প্রয়োজন হবে।
তাছাড়া, ডি মিনিমিস কর ছাড়ের নিয়ম উঠে যাওয়াতে চীনের প্যাকেজের চালানও ব্যবহত হবে। বুধবার নিয়মিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনীতি এবং বাণিজ্যিক বিষয়কে রাজনীতিকরণ করা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, চীনের কোম্পানিগুলোকে অযৌক্তিকভাবে দমন বন্ধ করতে হবে ওয়াশিংটনকে। চীনা কোম্পানিগুলোর বৈধ অধিকার দৃঢ়তার সঙ্গে রক্ষায় চীন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখবে বলে জানান তিনি।