বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কুতুবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা! এ সরকারি বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি দেখলে অনেকেই থমকে দাঁড়ান। ভাবেন এটি কিসের ঘর? কোন সাইন বোর্ড নেই। যদি শোনেন এটি একটি সরকারি প্রাইমারী স্কুল। চমকে গিয়ে প্রশ্ন করবেন তাহলে এই অবস্থা কেন? প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিন পরেও বিদ্যালয়টিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গড়ে ওঠেনি পাকা ভবন। বিদ্যালয়ে মাঠ থাকলেও সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, গত ১০ বছর পূর্বে কর্মরত শিক্ষক ও স্থানীয়দের অনুদানের টাকায় কাঠ ও টিন দিয়ে ওই বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয়েছিল। শুরু থেকে ওইটিনের ঘরে কোনমতে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান করে আসছিলেন শিক্ষকরা। ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ২০১৪ সালে সরকারীকরণ করা হয়। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ৯৬ জন শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক রয়েছে।
কুতুবপুর গ্রামের জামাল চাপরাশি জানান, বৃষ্টি হলে স্কুলের টিনের চালা দিয়ে পানি পড়ে। এই ভাঙ্গা-চোরা ঘরে পূনরায় কিভাবে ক্লাশ চলবে এ নিয়ে অভিভাবকরা ছেলে মেয়েদের নিয়ে চিন্তিত রয়েছে। স্কুলে পাকা ভবন ও স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন : শাহজাদপুরে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী হায়দার জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে সংঘঠিত প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুল ঘরটি বহুবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্কুলটিতে আজও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। তাই তীব্র গরমের সময় শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নানাবিধ সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী এ স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।
কুতুবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষিকা খুকু মনি জানান, স্কুল পাকা ভবন না থাকায় আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানাবিধ সমস্যায় আছি। ঘুর্ণিঝড় আম্পানে স্কুলটি ক্ষতিগ্র্স্ত হওয়ায় সংস্কারের জন্য দেড়লাখ টাকা সরকারী বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে ফ্লোর পাকা করা হবে।
দ্রুত পাকা ভবন নির্মাণের জন্য তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফয়সাল জামিল বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ওই বিদ্যালয়টি সংস্কারের জন্য সরকারি দেড়লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নতুন পাকা ভবন নির্মাণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।