রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

কেন ২ মিনিটে ‘নাই’ হয়ে যাচ্ছে রেলের টিকিট?

মাহবুব কবির মিলন, ফেসবুক থেকে
আপডেট : শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০

করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছে সীমিত সংখ্যক ট্রেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আসন সংখ্যা অর্ধেকেরও কম করা হয়েছে। ট্রেন এবং আসনের সংখ্যা কম হওয়ায় আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে অনেক মানুষ টিকিট না পেয়ে অভিযোগ করছেন। সবচেয়ে আলোচিত অভিযোগ হলো, ভোর ৬টায় টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার দেড়-দুই মিনিটের মধ্যে সব টিকিট শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া একাধিক পোস্টে ব্যাখ্যা দিয়েছেন রেল মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন।

গতকাল ২৪ জুলাই শুক্রবার এক পোস্ট মাহবুব কবির লিখেছেন, ‘ট্রেনে এক ডেস্টিনেশনে, একটি ক্লাসের সব টিকিট বিক্রি হতে এক থেকে দুই সেকেন্ড লাগে। মনে করুন, ২৭ তারিখে ঢাকা চট্টগ্রামে সুবর্ণের এসি স্নিগ্ধা সিট আছে ৫০০। এই ৫০০ টিকিট শেষ হতে মাত্র এক সেকেন্ড সময় লাগবে। ২য় সেকেন্ডে আর টিকিট পাবেন না। এবার বুঝুন, সিট কম, চাপ বেশি। কয় সেকেন্ড লাগবে সব টিকিট শেষ হতে। সো, কাল সকাল ছয়টা থেকে আসল যুদ্ধ শুরু। নিশ্চিত থাকুন, রেল বা সিএনএসবিডি থেকে কোন প্রকার সমস্যা বা ম্যানুপুলেশনের কোন প্রকার সুযোগ নেই। যদি কোন গেটওয়ের আজকের মত সমস্যা না হয়। ভাগ্য আপনাদের। ঈদে একটি ট্রেনের টিকিট শেষ হতে পাঁচ সেকেন্ড লাগার কথা নয়।’

একই বিষয়টি আরও পরিস্কার করতে শনিবার (২৫ জুলাই) বিকালে তিনি আরও একটি পোস্টে লিখেন, ‘আজ ২৯/০৭/২০২০ তারিখের ট্রেনের টিকিট দেয়া হয়েছে ভোর ৬.০০ থেকে। ১ম সেকেন্ডের অনেক কম সময়ে টিকিট কেটে ফেলেছে ৫০১ জন। এরপর ২য় সেকেন্ডের কম সময়ে কেটেছে ২২২ জন। এরপর মাত্র ৪/৫ সেকেন্ডে কেটেছে ৩৭২ জন। এভাবে সকাল ৮.২৮ মিনিট পর্যন্ত কেটেছে সর্বমোট ৪২২৬ জন। সকাল ১০.৫২ পর্যন্ত টিকিট পেয়েছে ৫১৪৪ জন। আপনারা এদের পিছনে ছিলেন বলেই টিকিট পাননি। দেখেছেন, সাইট হ্যাং হয়ে আছে। করোনার কারণে এবার সামান্য ট্রেন, সামান্য টিকিট।’

বাংলাদেশে রেলের টিকিট ভেরিফিকেশনের কোনো সিস্টেম নেই। ভুয়া এনআইডি দিয়ে টিকিট কাটে অনেকে। এই প্রসঙ্গে মাহবুব কবির মিলন লিখেছেন, ‘এবার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বলব। আজ এক মোবাইল দিয়ে দুইবারে ৮টি টিকিট করেছেন, এমন একজনের মোবাইলে রিং দিয়ে সংযোগ বন্ধ পাওয়া গেল। এনআইডি নাম্বার দিয়েছে ভুয়া। ঐ নাম্বারে কোন এনআইডি নেই। নাম ভুয়া। নিয়ম অনুযায়ি মাসে এক মোবাইল দিয়ে সর্বোচ্চ দুইবার ৮টি টিকিট করা যায়। এই লোক যদি ট্রেনে কোন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে, তবে তাকে ধরা খুব কঠিন।’

তিনি লিখেন, ‘টিকিটিং সিস্টেমে যাত্রীর কোনরূপ ভেরিফিকেশন ছাড়া টিকিট প্রদান সম্ভবত জগতে শুধু আমাদের এখানেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে গত কয়েকবছর যাবত রেলে বলে এসেছি, এনআইডি ভেরিফিকেশন করে অনবোর্ড মানে ট্রেনে যাত্রার সময় যাত্রীর পরিচয় করে “টিকিট যার, ভ্রমণ তাঁর” নিশ্চিত করা হলে একদিকে যেমন ট্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে, অন্যদিকে কালোবাজারি একদম বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ কালোবাজারি টিকিট কার নামে করে, কার কাছে বিক্রি করবে!

‘অনবরত লেগে ছিলাম। এখন রেলে জয়েন করে তা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। হতবাক হতে হয়, কারো আগ্রহ নেই এতে। হতাশ হবেন না। আমি জানি তা কিভাবে করে নিতে হয়। বন্ধ মোবাইল, ভুয়া নাম, ভুয়া এনআইডি দিয়ে কাটা টিকিটের সেই ৮ জন যাত্রীদের ঐ ট্রেনে এই প্রথম পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। অন্তত এই ৮টি টিকিটের। আপনাদের ভালবাসা আর প্রেরণায় রেলওয়ে এগিয়ে যাবে অনেক দূর ইনশাআল্লাহ।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া