কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রয়াত শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। এ সময় তারা অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম ও ভাই জারিফ জাওয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। কমিটির সদস্যরা সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হন।
শুক্রবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার বাগিচাগাঁও এলাকার অবন্তিকার বাসভবনে যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্য। এ সময় তারা সেখানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন। অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনমের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে তারা সেখান থেকে বের হন। তারপর ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন।
কুমিল্লায় যাওয়া তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সদস্য সচিব জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার অ্যাডভোকেট রঞ্জন কুমার দাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এসএম মাসুম বিল্যাহ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ঝুমুর আহমেদ।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার তদন্ত করতে গঠিত তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্য আড়াই ঘণ্টা ধরে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি যা জানেন সেগুলো আমাদের বলেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে সেগুলো বলা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে জিজ্ঞাসাবাদ করিনি। তদন্তের প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে পরবর্তীতে কথা বলা হতে পারে।
শেষে তদন্ত কমিটির সদস্যরা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। অবন্তিকার কবর জেয়ারত শেষে তারা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
এদিকে অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন যতটা আন্তরিক, আগে হলে হয়তো আমার মেয়েকে হারাতে হতো না। আমার কাছে যা জানতে চেয়েছেন আমি তদন্ত দলকে সব বলেছি। তারা আমাকে, আমার ছেলেকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। আমরা এখন জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তাহমিনা শবনম আক্ষেপের সুরে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন যতটা আন্তরিক, আগে এতটা হলে হয়তো, মেয়েকে হারাতে হত না।”
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, জবির তদন্ত কমিটির সদস্যরা সাড়ে ৩টার দিকে কারাগারে আসেন। তারা কারাবিধি মেনে অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামির সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকা সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগ এনে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দীকির নাম উল্লেখ ও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর ঢাকা থেকে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করা হয়। রিমান্ড শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।